এয়ারবাস না কিনলে বাংলাদেশ–ইইউ সম্পর্কের ওপর প্রভাব পড়বে : জার্মান রাষ্ট্রদূত
আলোচনার পরও ফ্রান্স থেকে এয়ারবাস না কিনলে তার প্রভাব বাংলাদেশ–ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্পর্কের ওপর পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত জার্মান রাষ্ট্রদূত রুডিগার লোটজ। বুধবার(২৬ নভেম্বর) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিক্যাব টকে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন বিমানের জন্য উড়োজাহাজ কেনার যে আলোচনা চলছে, সেখানে ইউরোপীয় কোম্পানির এয়ারবাসকে রাখার পক্ষে বলছে ইইউ।
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতরা একযোগে এয়ারবাস কেনার বিষয়টি ‘যৌক্তিকভাবে’ বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
এ প্রসঙ্গে জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, এয়ারবাস না কিনলে তো অবশ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। সেটি বড় আকারে না হলেও পড়বে, যেমন বাণিজ্যিকসহ জিএসপি প্লাস আলোচনাকেও প্রভাবিত করবে।
তিনি বলেন, এটি কাউকে হুমকি দেওয়া নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো পরিবেশকে প্রভাবিত করে। এয়ারবাস কেনার মতো সিদ্ধান্ত আলোচনা ও আলোচনার সামগ্রিক পরিবেশ নির্ধারণ করে। অবশ্যই এটি বাংলাদেশের সার্বভৌম সিদ্ধান্ত। কিন্তু ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক জীবনের মতোই সিদ্ধান্তগুলোর একটি সামগ্রিক ফল থাকে।
ফেব্রুয়ারিতে সু্ষ্ঠু, অবাধ ও সর্বোচ্চ ভোটারের উপস্থিতি একটি নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় জার্মান। এ কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ড. রুডিগার লোটজ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি জাতীয় সংলাপ জরুরি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রূপান্তর শুধু দেশের জন্য নয়, পুরো অঞ্চলের জন্যও ইতিবাচক সংকেত। বিশ্বজুড়ে গণতন্ত্র চাপের মুখে থাকায় আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচন হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি চাই শান্তিপূর্ণ প্রচার প্রচারণা দেখতে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা থেকে বিরত থাকবে। উচ্চ ভোটার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, আমি অধ্যাপক ইউনূসকে ৬০ শতাংশ উপস্থিতির একটি সীমা উল্লেখ করতে শুনেছি, যা যুক্তিযুক্ত। আমরা এমন একটি নির্বাচন চাই, যেখানে কেউ ভয়ভীতি বা হুমকির মুখে থাকবে না, যেখানে মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করতে পারবে এবং ভোট গণনার প্রক্রিয়া সঠিক হবে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময় শেখ হাসিনা জার্মানে আশ্রয় পেলেও এখন প্রেক্ষাপট ভিন্ন। বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্যই বিগত আওয়ামী লীগ সরকার যে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তা আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী যথাযথ বিচার হওয়া, তবে মৃত্যুদণ্ডকে কখনই সমর্থন করে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
জার্মান রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশের এখন যা দরকার খুব শিগগির, তা হলো একটি জাতীয় পুনর্মিলন প্রক্রিয়া, একটি জাতীয় সংলাপ। বহু বছর ধরে সেটা অনুপস্থিত। দেশকে একত্রে আসতে হবে। আমি বুঝতে পারছি সমস্যাটা, যদি বিগত সরকারের প্রতিনিধিরা ভুল স্বীকার করতে অনিচ্ছুক। পুনর্মিলনের জন্য দুই পক্ষই প্রয়োজন। এখনো আমরা সেখানে পৌঁছাইনি। তবে নির্বাচনের পর এমন একটি প্রক্রিয়ার দিকে গুরুতর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ভৌগোলিকভাবেই বাংলাদেশের ওপর ভারত ও চীনের প্রভাব থাকবে। এক্ষেত্রে ভারসাম্য নীতি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ বলেও মনে করেন তিনি। বলেন, শিক্ষার্থীরা ভিসা আবেদনের সময় সঠিক তথ্য দিলে ভিসা প্রক্রিয়া তরান্বিত হবে।




Comments