Image description

চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে একটি কেরাত সম্মেলনে ‘পাকিস্তান পাকিস্তান, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। 

তবে আয়োজকরা বলছেন, শুধু পাকিস্তান নয়, কেরাত সম্মেলনে অংশ নেওয়া প্রতিটি দেশের নাম উল্লেখ করে স্লোগান দেওয়া হয়েছে। অসৎ উদ্দেশে কেউ ভিডিওর একাংশ ছড়িয়ে দিয়েছে। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেন তারা। 

স্থানীয়রা জানান, রোববার দুপুরের পর সন্দ্বীপের শিবেরহাট সাউথ সন্দ্বীপ হাইস্কুল মাঠে পঞ্চম আন্তর্জাতিক কিরাত সম্মেলন হয়। আয়োজক ছিল আন্তর্জাতিক কোরআন তিলাওয়াত সংস্থা (ইক্বরা), ব্যবস্থাপনায় সন্দ্বীপের সাওতুল কুরআন ইনস্টিটিউট। সম্মেলনের আহ্বায়কও ছিলেন ইনস্টিটিউটটির পরিচালক হাফেজ মাওলানা তাওহীদুল ইসলাম। সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের কারীরা অংশ নিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করেন। 

ভাইরাল হওয়া ২০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, মঞ্চে বসে এক ব্যক্তি স্লোগান ধরেছেন, ‘পাকিস্তান পাকিস্তান’, এরপর সামনে উপস্থিত শ্রোতারা সমস্বরে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’। ওই ব্যক্তি আবার বলছেন, ‘বাংলাদেশ বাংলাদেশ’। সমবেত অন্যরা তার সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলছেন, ‘জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ।’ এরপর তিনি স্লোগান ধরেন ‘নারায়ে তাকবির’।  

সাওতুল কুরআন ইনস্টিটিউটের পরিচালক হাফেজ মাওলানা তাওহীদুল ইসলাম এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘যখন বিদেশি কারীরা মঞ্চে উঠেন, তখন বাংলাদেশি একজন কারী তেলাওয়াত করছিলেন। বিদেশি অতিথিরা মঞ্চে উঠার সময় তিনি বাংলাদেশ, মিসর, পাকিস্তান, ইরান, ফিলিপাইনসহ বিভিন্ন দেশ নিয়ে স্লোগান দেন। সাধারণত আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানে অথিতিদের এভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়। কিন্তু পাকিস্তান ও বাংলাদেশের স্লোগানের ভিডিও কাট করে কেউ ভাইরাল করেছে।’ 

তিনি বলেন, ‘এই স্লোগান এ কারণে দেওয়া নয় যে, আমরা পাকিস্তানকে অন্তরে ধারণ করি। এটা কখনো হতে পারে না। পাকিস্তানকে যদি ভালোবাসি কোরআনের জন্য, কিংবা ইসলামের কারণে ভালোবাসব। একাত্তরে আমাদের সঙ্গে তাদের যে যুদ্ধ সেটার কারণে আমরা কখনো পাকিস্তানকে ভালোবাসব না। এ জন্য আমরা সবসময় তাদের ঘৃণা করি। এরপরও এই স্লোগানের কারণে কেউ যদি কষ্ট পেয়ে থাকেন আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।’ ২০২০ সাল থেকে এই কেরাত সম্মেলনের আয়োজন করে আসছেন বলে জানান তিনি। এটি তাদের পঞ্চম আয়োজন।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সোলায়মান বাদশা বলেন, ‘পাকিস্তান-জিন্দাবাদ স্লোগান দেওয়ার মতো ধৃষ্টতার নিন্দা জানাই। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এমন স্লোগান আমরা সহ্য করতে পারি না।’ সেনেরহাটের বাসিন্দা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘সন্দ্বীপে আগেও এমন আয়োজন হয়েছে। কিন্তু এভাবে প্রকাশ‍্যে পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান শুনিনি কখনো।’

সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মংচিংনু মারমা জানান, ঘটনাটি কেউ তার নজরে আনেনি। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি। 

সন্দ্বীপ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে দেখব।’