বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের মূল পর্বে খেলবে। বাফুফে ঋতুপর্ণাদের প্রস্তুতির জন্য ঢাকায় ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন করেছে। মালয়েশিয়া ও আজারবাইজান দুই দলের বিপক্ষেই বাংলাদেশ হেরেছে। মালয়েশিয়ার চেয়ে আজারবাইজান র্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকায় ম্যাচ হারলেও মেয়েদের খেলায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ঋতুপর্ণাদের বৃটিশ কোচ পিটার বাটলার।
আজ ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বৃটিশ এই কোচ বলেন, ‘আমরা একটা খুব শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলেছি। যারা, সত্যি বলতে, অনেক ফান্ডিং পায়, তাদের পেশাদার লিগ আছে, দারুণ সুবিধা আছে। আর ম্যাচের আগে আমি মেয়েদের বলেছিলাম আমি শুধু চাই আমরা ম্যাচটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করি। আমরা যেন মালয়েশিয়ার মতো পিছিয়ে গিয়ে চুপচাপ হার মানি না। আমরা চেষ্টা করেছি, এবং মেয়েরা যেভাবে খেলেছে, আমি তাতে গর্বিত। প্রচেষ্টা আর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টায় তাদের ১০/১০ দেব। কারণ আমরা মালয়েশিয়ার মতো পিছিয়ে যাইনি আমরা লড়াই করেছি। আর মানের কথা বললে পাঁচ, ছয়, খুব হলে সাত। আমি শুধু সৎভাবে বলছি।’
বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ছিল একেবারেই ছন্নছাড়া। আজকের ম্যাচে খানিকটা গোছালো। দুই ম্যাচের তুলনায় সেভাবে আগ্রহী নন কোচ, ‘এটা ভিন্ন ম্যাচ ছিল। মালয়েশিয়া গভীর ডিফেন্সে খেলেছিল। কিন্তু মনে রাখতে হবে, আজ আমরা এমন দলের বিপক্ষে খেলেছি, যাদের মান মালয়েশিয়ার চেয়ে ভালো। মালয়েশিয়ার বিরুদ্ধে আমি মনে করেছি আমরা বেশি নিয়ন্ত্রিত ফুটবল খেলেছি। আজ আমি মনে করি আমরা হয়তো কিছুটা তাড়াহুড়া করেছি। তারপরও আমি মেয়েদের নিয়ে গর্বিত। আমি ওদের বলেছিলাম- “মালয়েশিয়ার মতোই নিজের সবটুকু দাও, আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- ম্যাচটাকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করো।” বাংলাদেশ দুই গোল হজম করেছে। দুই গোল খাওয়ার ঘটনা ব্যাখ্যা করলেন এভাবে, 'শেষ ছয়-সাত মিনিট পর্যন্ত ম্যাচটা কঠিন ছিল। আর প্রথম গোলটাও ছিল অসতর্কতার ফল।’
এশিয়া কাপ নিশ্চিত করার পর বাংলাদেশ টানা চার ম্যাচ হারল। থাইল্যান্ডে দুই অ্যাওয়ে ম্যাচের পর ঢাকায় মালয়েশিয়া ও আজারবাইজানের বিরুদ্ধে। টানা চার হারের পরও প্রাপ্তি কি এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমরা হয়তো আট ম্যাচও টানা হারতে পারি। আমরা বাংলাদেশ। আমি শুধুই ইতিবাচকতা দেখতে পাই মেয়েদের ভেতর থেকে। বাইরের জিনিসের দায়িত্ব আমি নিতে পারি না। আমাদের কোনো ট্রেনিং সুবিধা নেই। মানসম্মত জিম নেই। একটা লিগও নেই- লিগ বলে কিছু নেই। তাহলে আপনি আমাকে কী করতে বলছেন?
শিশুদের জন্মদিনের পার্টিতে যে জাদুকর টুপি থেকে সাদা খরগোশ বের করে-আপনি কি ভাবেন আমি সেই জাদুকর? বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিবাচক দিক হলো-মাঠে এগারো জন খেলোয়াড়কে ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে নামানো, যারা শেষ দুই ম্যাচে যেমন লড়েছে, এবং আজকের মতো শক্ত দলের বিপক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। নেতিবাচক দিক অনেক— লিগ নেই। আপনি জানেন, আজারবাইজানের মেয়েরা কত টাকা পায়? বিশাল পরিমাণ, লাখ লাখ ডলার। তারা সময়মতো ম্যাচ ফি পায়। বাস্তব হতে হবে। আমি কোনো জাদুকর নই যে টুপি থেকে খরগোশ বের করব।’




Comments