খাদ্যদূষণকে জাতীয় সংকট হিসেবে উল্লেখ করে তা মোকাবিলায় সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে খাদ্যদূষণ রোধে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম ও প্রস্তাবনা লিখিত আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধ বিষয়ক এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন।
বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘খাদ্যে ভেজাল বা দূষণের বিষয়টি আমাদের জানা। আমাদের সন্তান, পরিবার ও আপনজনরা এর ভুক্তভোগী। নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই এই সংকট মোকাবিলায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বাস্তবায়নের দিকগুলো পর্যালোচনা করে আমরা জরুরি ভিত্তিতে কাজ শুরু করব।’
বৈঠকে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে দূষণের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়। জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৩ কোটি শিশু খাদ্যবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়। ইউনিসেফের তথ্যমতে, দেশের সাড়ে ৩ কোটি শিশু সীসা দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে, যা তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করছে। বিভিন্ন নমুনায় সীসা, কীটনাশক ও অ্যান্টিবায়োটিকের উপস্থিতি পাওয়ার বিষয়টিও জানানো হয়।
বিশেষ করে পোল্ট্রি খাতে অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় (উইথড্রয়াল পিরিয়ড) পার হওয়ার আগেই তা বাজারজাত করার ফলে মানবদেহে এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।
বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবরেটরিগুলো ব্যবহার করে খাদ্যের মান পরীক্ষা, জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গণমাধ্যমের ভূমিকা এবং পাঠ্যপুস্তকে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয় অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়।
এ সময় কৃষি উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, খাদ্য উপদেষ্টা, স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা এবং বিএসটিআই ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




Comments