ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ‘প্রথম আলো’ ও ‘ডেইলি স্টার’ কার্যালয়ে হামলা এবং দেশজুড়ে চলমান ‘মব সন্ত্রাস’ ও সহিংসতার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংস্থাটি এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
বিবৃতিতে আসক বলে, শরীফ ওসমান হাদির অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি। তবে এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গতকাল ১৮ ডিসেম্বর রাত থেকে দেশে যে পরিকল্পিত মব সন্ত্রাস ও সহিংসতার ধারাবাহিকতা দেখা গেছে, তা অত্যন্ত ভয়াবহ ও উদ্বেগজনক।
সংস্থাটি উল্লেখ করে, প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। এই হামলার ফলে সেখানে কর্মরত সাংবাদিক ও কর্মীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় পড়েছেন। এমনকি হামলার সময় ফায়ার সার্ভিসের কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনা পরিস্থিতির ভয়াবহতাকে আরও প্রকট করে তুলেছে। এর ফলে পত্রিকা দুটির মুদ্রিত ও অনলাইন সংস্করণ বন্ধ রাখতে হয়েছে, যা সংবাদপত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সহিংসতার প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে ‘নিউ এজ’ সম্পাদক নূরুল কবীরকে হেনস্তা করার ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য একটি ভয়ংকর বার্তা। একই সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানট ভবনে হামলা, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় হাই-কমিশনের সামনে বিক্ষোভের নামে অস্থিরতা সৃষ্টির ঘটনাগুলো একটি সুপরিকল্পিত অপচেষ্টার অংশ বলে মনে করে আসক।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) মনে করে, সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের ওপর এই সমন্বিত হামলা দেশে উগ্র ও সহিংস চিন্তার বিপজ্জনক বিস্তারের ইঙ্গিত দেয়। এই পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দায়িত্বরত সেনাবাহিনী কেন সময়মতো ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে কার্যকর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি, তা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
বিবৃতির শেষাংশে আসক অবিলম্বে শরীফ ওসমান হাদির মৃত্যুর ঘটনায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করার পাশাপাশি মব সন্ত্রাসে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়। একই সঙ্গে সংবাদমাধ্যম, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান এবং জুলাই আন্দোলনের তরুণদের পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।




Comments