জনগণের ক্ষমতায় ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে চাই: আমীর খসরু
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকারের ক্ষমতা কোনো রাষ্ট্রের জন্য ভালো নয়; জনগণের ক্ষমতাই রাষ্ট্রের জন্য ভালো।’ তিনি বলেন, ‘এটার জন্যই গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের লক্ষ্য হলো জনগণের ক্ষমতার মাধ্যমে সরকারের ক্ষমতা ব্যালেন্স করা। আমরা জনগণের ক্ষমতায় ভিত্তি করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে চাই।’
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর রেডিসন ব্লু হোটেলের মেজবান হলে চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত বাণিজ্য সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যবসায়ীদের এ সম্মেলন করার গুরুত্ব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই এক্সারসাইজটা আমরা আসলে গত ছয় মাস ধরে করছি। ইতোমধ্যে অনেকগুলো বিভাগে করেছি। আজকে চট্টগ্রামে করছি। শুধু ঢাকা বাকি রয়েছে। প্রায় সময় আমরা দেখেছি, ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কাজে রাজনীতিবিদদের অর্থাৎ মন্ত্রী-এমপিদের কাছে যায়। আমরা এই সিস্টেমটা ভাঙতে চাই। এই এক্সারসাইজের উদ্দেশ্য হলো- রাজনীতিবিদরা আপনাদের কাছে আসবে।’
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র রাজনীতিতে গণতন্ত্র করার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক করা যায় না। গণতন্ত্রের অর্থ হলো- সকলের অধিকার সমুন্নত রাখা। এজন্য আমাদের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। এজন্য আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে- সিরিয়ার ডি-রেভুলেশন করা। এর মাধ্যমে আমরা দুর্নীতিবাজদের হাতে যে ক্ষমতা, সেটি ভেঙে দিতে চাই।’
আমদানিকারকদের সুবিধা তৈরির লক্ষ্যে তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা বিষয়ে ব্যুরোক্রেসি হাত থেকে তুলে ব্যবসায়ীদের হাতে দিতে চাই। এজন্য ব্যবসায়ীদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি- আগামী দিনে যারা এক্সপোর্ট করবে তাদের আমরা ব্যাক-টু-ব্যাক সুবিধা দিবো। আরেকটি হলো অটোমেশন। সব ক্ষেত্রে অটোমেশন করতে হবে। এজন্য একটি সুপারভাইজারি কমিটি করা হবে। এতে একটা কনটেইনার আনতে যত কাজ করতে হয়, যত পারমিশন নিতে হয়, সব অটোমেশনের মাধ্যমে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস চালু করতে হবে।’
অনুষ্ঠানের বক্তব্যে বিজিএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি সেলিম রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রামে আরো ইপিজেড করা দরকার। যদি করেন আমরা ইন্ডাস্ট্রি করবো। পাশাপাশি এসএমই-কে উৎসাহিত করতে হবে। এছাড়া চট্টগ্রামে ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টিতে সহযোগিতা পেলে আমরা জাতীয় অর্থনীতিতে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবো।’
আন্তঃজেলা বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন বলেন, ‘সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ার অন্যতম কারণ হলো- আমরা অভিজ্ঞ চালক সৃষ্টি করতে পারিনি। এজন্য আমাদের কাজ করতে হবে। চালকদের প্রশিক্ষিত করতে পারলে আমরা দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবো। এতে ব্যবসায়িকভাবে আমরা লাভবান হবো।’
চিটাগং উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি সুলতানা নুরজাহান রোজী বলেন, ‘ব্যবসায়ীর জন্য জামানত বিহীন ঋণ ও প্রশিক্ষণ দরকার। প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি মনে করি, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগ পেলে পরিবার উন্নত হবে, দেশ সম্বৃদ্ধ হবে।’
এশিয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যবসা সহজ করে করতে চাই। এখানে অনেক ব্যবসায়ী আছেন। যারা পরিশ্রম করেছেন, মার খেয়েছেন কিন্তু টিকে আছেন। আমরা আমাদের কথা বলার সুযোগটা চাই। আপনারা এ সুযোগটা দিয়েন।’
বারভিডার সাবেক মহাসচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দরকে কোনোভাবে আঞ্চলিক মনে করবেন না। এটি জাতীয় বিষয়। আমি বিএনপির ৩১ দফা দেখেছি। এখানে বাণিজ্যিক প্রসঙ্গ আছে। তবু আরও কিছু আলোচনা করার আছে। এ বিষয়ে আমীর খসরু ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।’
চেম্বারের সাবেক সভাপতি আলী আহম্মদের সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মীর আব্দুস সালাম, বান্দরবান চেম্বার অব কমার্সের নির্বাহী সদস্য জসীম উদ্দিন, রাঙামাটি চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এডভোকেট মামুনুর রশিদ, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মানিক-উর রহমান, জুনিয়র চেম্বার চট্টগ্রামের সভাপতি জুনায়েদ আহমেদ রাহাত, চট্টগ্রাম ফার্নিচার প্রস্তুতকারক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান, সি-কম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমিরুল হক, বিজিএপিএমইএ ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শহীদ উল্লাহ চৌধুরী, প্যাসিফিক জিন্সের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, চট্টগ্রাম সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী প্রমুখ।




Comments