ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডের প্রধান দুই আসামি ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে যাওয়ার যে দাবি ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) করেছে, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। মেঘালয় রাজ্য পুলিশ এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো তথ্য তাদের কাছে নেই এবং হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট কাউকে আটকের খবরও সত্য নয়।
এর আগে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, হাদি হত্যার প্রধান আসামি ফয়সাল ও আলমগীর সীমান্ত পার হয়ে মেঘালয়ে আত্মগোপন করেছেন। তিনি দাবি করেন, ফিলিপ ও সঞ্জয় নামে দুই ব্যক্তির সহায়তায় তারা সীমান্ত পার হন এবং পরে মেঘালয়ে ‘পুত্তি’ ও ‘সামী’ নামে দুই ব্যক্তির কাছে পৌঁছান। ডিএমপি আরও দাবি করে, অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগে তারা জানতে পেরেছেন যে মেঘালয় পুলিশ পুত্তি ও সামীকে গ্রেপ্তার করেছে।
ডিএমপির এই দাবিকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বানোয়াট’ বলে আখ্যা দিয়েছে ভারত। মেঘালয় রাজ্য পুলিশের মহাপরিদর্শক (ডিজিপি) ইদাশিশা নংরাং জানান, এ বিষয়ে তাদের কাছে কোনো নিশ্চিত তথ্য নেই। বিএসএফের মেঘালয় ফ্রন্টিয়ারের আইজি ওপি উপাধ্যায় ডিএমপির দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’ মেঘালয় পুলিশের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, পুত্তি বা সামী নামে কাউকে শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করার কোনো রেকর্ড তাদের কাছে নেই। এমনকি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো প্রকার আনুষ্ঠানিক সমন্বয় ছাড়াই বাংলাদেশ পুলিশ এই তথ্য প্রচার করেছে বলেও অভিযোগ করা হয়।
গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টনে জুমার নামাজের পর প্রচারণা চালানোর সময় মোটরসাইকেলে আসা দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হন শরীফ ওসমান হাদি। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলে সেখানে ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এই ঘটনায় পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, যা বর্তমানে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেখানে বলছে আসামিরা সীমান্তে পার হয়ে গেছেন, সেখানে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের এই অস্বীকৃতি হাদি হত্যা মামলার তদন্তে এবং আসামিদের ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় নতুন করে ধোঁয়াশা ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।




Comments