রাজধানীর কারওয়ান বাজারে চাঁদাবাজির প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের আয়োজিত মানববন্ধনে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা ১১টার দিকে কিচেন মার্কেটের সামনে এ হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় ব্যবসায়ীদের পাল্টা ধাওয়ায় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সৃষ্টি হয়, যা পুরো এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, গত কয়েক মাস ধরে কারওয়ান বাজার এলাকায় নতুন করে চাঁদাবাজি শুরু হয়েছে। এর প্রতিবাদে সোমবার সকালে কিচেন মার্কেটের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের ডাক দেন তারা। কর্মসূচি শুরুর প্রায় আধা ঘণ্টা পর একদল যুবক অতর্কিতে লাঠিসোঁটা নিয়ে আন্দোলনরত ব্যবসায়ীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
আন্দোলনরত একাধিক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেছেন, হামলাকারীদের মধ্যে স্থানীয় যুবদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী ছিলেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ব্যবসায়ী বলেন, "গত বছরের ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর চাঁদাবাজি বন্ধ ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে স্থানীয় যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে একটি গোষ্ঠী আবারও দোকানিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় শুরু করেছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়েই আমরা আজ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি।"
হামলার শুরুতে ব্যবসায়ীরা কিছুটা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলেও মুহূর্তেই তারা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লাঠিসোঁটা হাতে হামলাকারীদের পাল্টা ধাওয়া দেন। ব্যবসায়ীদের প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে ব্যবসায়ীরা চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। খবর পেয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
চাঁদাবাজির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় এক যুবদল নেতা। তিনি দাবি করেন, এটি কোনো চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ঘটনা নয়, বরং কিচেন মার্কেট কমিটির অভ্যন্তরীণ নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার বিরোধ থেকে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছে।
এ বিষয়ে তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈন্যু মারমা বলেন, "চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মানববন্ধন চলাকালে একদল লোক ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা চালায়। খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।"
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অবিলম্বে চাঁদাবাজদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তারা আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।




Comments