Image description

মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বাংলাদেশি সাংবাদিক এবং দি সাউথ এশিয়ান ইনসাইডার-এর সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশ পুলিশের পরিচয়ে ফোন করে হুমকিমূলক ভাষায় কথা বলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনাকে সংবিধান ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। উলামা জনতা ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মাওলানা নাজমুল হক সাকিব স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এটিকে “বেআইনি” এবং “স্বৈরাচারী আমলের প্রতিধ্বনি” হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সংবিধানের ৩১ নং অনুচ্ছেদে নাগরিকের আইনি সুরক্ষার নিশ্চয়তা এবং ৩২ নং অনুচ্ছেদে ব্যক্তির জীবন ও স্বাধীনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী, কোনো নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা লিখিত নোটিশ, প্রাতিষ্ঠানিক তদন্ত এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু ফোন কলের মাধ্যমে ভয়ভীতি প্রদর্শন বা পুলিশ অফিসে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া সম্পূর্ণ বেআইনি। এটি শুধু সংবিধানের লঙ্ঘনই নয়, বাংলাদেশ সেবা আচরণবিধি ২০১৮-এরও সুস্পষ্ট উল্লঙ্ঘন বলে মনে করা হচ্ছে।

উলামা জনতা ঐক্য পরিষদ এ ঘটনাকে “অগ্রহণযোগ্য” বলে উল্লেখ করে জানিয়েছে, “এ ধরনের আচরণ স্বৈরাচারের পতনের পরও প্রশাসনের মধ্যে অব্যাহত থাকা অকল্পনীয় ও গুরুতর অন্যায়।” তারা দাবি করেছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবিলম্বে সালাহউদ্দিন আহমেদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সালাহউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রীয় স্বার্থে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা করে আসছেন। দি সাউথ এশিয়ান ইনসাইডার-এর সম্পাদক হিসেবে তিনি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছেন। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা সাংবাদিক সমাজ ও সুশীল সমাজে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেকোনো অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলা অপরিহার্য। ফোনে হুমকি বা ভয়ভীতি প্রদর্শনের মতো কার্যক্রম শুধু ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে না, বরং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও স্বচ্ছ প্রশাসনের নীতিকে ক্ষুণ্ন করে। এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি জনগণের আস্থা কমিয়ে দেয়।

এ ঘটনায় সাংবাদিক সমাজ, মানবাধিকার সংগঠন এবং সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি উঠেছে। অনেকে মনে করেন, এ ধরনের আচরণ শুধু একজন সাংবাদিকের প্রতি অবিচার নয়, বরং এটি বাংলাদেশের সংবিধান ও মানবাধিকারের মৌলিক নীতির প্রতি অবমাননা।

উলামা জনতা ঐক্য পরিষদ এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে প্রশাসনের কাছে দায়িত্বশীল পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, “প্রশাসনকে অবশ্যই এ ঘটনার জন্য দায়িত্ব নিতে হবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।” সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকার রক্ষায় সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এখন সময়ের দাবি বলে মনে করা হচ্ছে।