স্প্যানিশ লা লিগায় দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছে বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের চেয়ে ৭ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে হান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা। মাঠের এই সাফল্যের মাঝেই ক্লাবটিকে নিয়ে শোনা যাচ্ছে এক চাঞ্চল্যকর গুঞ্জন। কাতালান এই ক্লাবটি কিনে নিতে নাকি ১০ বিলিয়ন ইউরোর (বিশাল অঙ্কের) প্রস্তাব দিতে প্রস্তুত সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
সম্প্রতি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বার্সেলোনা বর্তমানে বড় ধরনের আর্থিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। ক্লাবটির ঋণের পরিমাণ ২.৫ বিলিয়ন ইউরোরও বেশি। এই ভঙ্গুর আর্থিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সৌদি যুবরাজ বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন। একে সৌদি আরবের ‘ক্রীড়া কূটনীতি’ বা স্পোর্টস ওয়াশিং কৌশলের অংশ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। এর আগেও সৌদি পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ) ফুটবলসহ বিভিন্ন ক্রীড়াক্ষেত্রে বড় ধরনের বিনিয়োগ করেছে।
তবে ১০ বিলিয়ন ইউরোর এই প্রস্তাব যতই লোভনীয় হোক না কেন, বার্সেলোনা বিক্রি করা বাস্তবে প্রায় অসম্ভব। কারণ, বার্সেলোনা কোনো ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান নয়; এটি সম্পূর্ণ ‘সোসিও’ বা সদস্য মালিকানাধীন ক্লাব। হাজার হাজার সদস্যের ভোটের মাধ্যমে ক্লাবের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঐতিহ্যগতভাবে তারা কোনো বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের হাতে ক্লাবের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তুলে দিতে রাজি হবেন না।
ফুটবল ও অর্থনীতি বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরবের পক্ষে ক্লাবের পূর্ণ মালিকানা নেওয়া সম্ভব না হলেও, তারা বার্সেলোনার বাণিজ্যিক শাখা বা ‘এন্টারটেইনমেন্ট’ খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। সেক্ষেত্রে পিআইএফ অর্থ লগ্নী করতে পারলেও ক্লাবের মূল পরিচালনা পর্ষদ বা মাঠের ফুটবলের নিয়ন্ত্রণে তাদের কোনো হাত থাকবে না।
সব মিলিয়ে, সৌদি যুবরাজের বার্সেলোনা কেনার বিষয়টি এখনো বাস্তবের চেয়ে গুজব হিসেবেই বেশি বিবেচিত হচ্ছে। তবে ঋণে জর্জরিত বার্সেলোনা এবং ইউরোপীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ কাঠামো নিয়ে এই খবর নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।




Comments