Image description

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করা হয়েছে। বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ৪৫৩ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হয়।

আইন অনুযায়ী, রায় প্রকাশের দিন থেকে পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে দণ্ডিতদের উচ্চ আদালতে আপিল করতে হবে।

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

রায়ে ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করেন, আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

শেখ হাসিনা: দুটি পৃথক অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আসাদুজ্জামান খান কামাল: একটি অভিযোগে তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন: সাবেক আইজিপি নিজের দোষ স্বীকার করে ‘রাজসাক্ষী’ (অ্যাপ্রুভার) হওয়ায় তাকে নমনীয় সাজা হিসেবে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ৫টি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছিল। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:

১. ১৪ জুলাই গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য।
২. হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলন দমনের নির্দেশ।
৩. রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা।
৪. ঢাকার চানখাঁরপুল এলাকায় ৬ আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা।
৫. আশুলিয়ায় ৬ জনকে পুড়িয়ে হত্যা।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। গত বছরের ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মাধ্যমে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়। তদন্ত ও যুক্তিতর্ক শেষে গত ১৭ নভেম্বর সংক্ষিপ্ত রায় ঘোষণা করা হয়, যা আজ পূর্ণাঙ্গ আকারে প্রকাশিত হলো। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় এটিই প্রথম রায়।