
দেশের তিন জেলায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় বাবা-ছেলে, মা-মেয়েসহ ৯ জন নিহত হয়েছেন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত চারজন। শুক্রবার ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ, রংপুর ও বগুড়ায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
এখানে প্রতিটি দুর্ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া হলো:
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়কে সিএনজি-পিকআপ সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলাবাজার এলাকার বাঘেরকোনা স্থানে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন: সুনামগঞ্জ পৌর শহরের উকিলপাড়ার বাসিন্দা আবাদিত কেশবা প্রিয়া (৪০) এবং তার মেয়ে প্রথমা চৌধুরী। তারা মূলত হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার নবীপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। এছাড়া সিএনজি চালক শহরের নবীনগর এলাকার সজল ঘোষ (৫০) এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে সুনামগঞ্জ থেকে সিলেট অভিমুখে যাচ্ছিল একটি সিএনজি অটোরিকশা। বাঘেরকোনা এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপের সঙ্গে সেটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের তীব্রতায় ঘটনাস্থলেই সিএনজি যাত্রী কেশবা প্রিয়া ও চালক সজল ঘোষের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত কেশবা প্রিয়ার মেয়ে প্রথমা চৌধুরীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল আহাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, পিকআপ-সিএনজি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া: বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে বাবা-ছেলেসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। এই দুর্ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সারিয়াকান্দি উপজেলার ফুলবাড়ি কাঠালতলা এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন: গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কুঠিবাড়ি গ্রামের বিপুল চন্দ্র দাস (৩৮), তার ছেলে বিপ্লব চন্দ্র দাস (৫) এবং অটোরিকশা চালক শিবগঞ্জ উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের শুকুর আলী (৪০)। আহতরা হলেন বিপুলের স্ত্রী মমতা রানী এবং মেয়ে রুপা মনি দাস।
সারিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামিরুল ইসলাম জানান, দুর্গাপূজার ছুটিতে বিপুল চন্দ্র দাস তার পরিবার নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছিলেন। ভোরে ঢাকা থেকে বাসে বগুড়ায় নেমে তারা অটোরিকশা যোগে নারচী গ্রামে যাচ্ছিলেন। পথে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বেপরোয়া গতির বালুবাহী ট্রাকের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই অটোরিকশা চালক শুকুর আলী মারা যান। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিপুল ও তার ছেলে বিপ্লব মারা যান। আহত মমতা রানী ও রুপা মনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রংপুর: রংপুরের দমদমা ব্রিজের ইউটার্ন এলাকায় শুক্রবার ভোর রাতে পিকআপের সঙ্গে বালুবাহী ট্রাকের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এতে আরও দুইজন আহত হয়েছেন।
প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, মোতালেব তার পরিবারকে নিয়ে ঢাকা থেকে রংপুর পীরগাছা যাচ্ছিলেন। পথে দমদমা এলাকায় ইউটার্ন নেওয়ার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মোতালেবের স্ত্রী শাহীনা বেগম এবং তাদের এক বছরের সন্তান ওয়ালিদ নিহত হন। একইসঙ্গে পিকআপের হেলপার আরিফও নিহত হন। এছাড়া, আহত মোতালেব ও পিকআপের ড্রাইভারকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ঢাকা থেকে আসা একটি পিকআপকে বালুবাহী ট্রাক পেছন থেকে ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর বালুবাহী ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপার পালিয়ে গেছে এবং তাদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Comments