ভোরের স্নিগ্ধতায় শিশিরভেজা শাপলা; ক্ষেতলালের পাখি কলোনিতে এক স্বপ্নীল সকাল
ভোরের প্রথম আলো ফুঁটে উঠতেই ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে গড়ে ওঠা “পাখি কলোনি” যেন জেগে ওঠে এক স্বপ্নীল সৌন্দর্যে। শিশিরভেজা বাতাসে দোলে পাতা, পাখির কিচিরমিচিরে মুখর চারপাশ আর পুকুরের জলে ফুটে থাকা শত শত গোলাপি পদ্ম যেন সূর্যোদয়ের হাসি হয়ে ওঠে প্রকৃতির বুকে।
এই পুকুরে ফুটে থাকা পদ্মগুলো শুধু ফুল নয়, যেন এক একটি জীবন্ত কবিতা, যা বলে যায় প্রকৃতির শান্তির ভাষা। পুকুরের স্থির জলে পদ্মের প্রতিবিম্ব পড়ে তৈরি করেছে অপার্থিব দৃশ্য। যেন স্বপ্নের ছবির মতো এক সকাল।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ আল জিনাত বলেন, পাখি কলোনি আমাদের উপজেলার অন্যতম পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ। এখানে পাখিদের পাশাপাশি পদ্ম ফুলও যুক্ত হয়েছে এই সৌন্দর্যের যাত্রায়। প্রতিদিন সকালে যখন এই দৃশ্য দেখি, মনে হয় প্রকৃতি যেন নিজেই আমাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান বলেন, পদ্ম বা শাপলা কেবল ফুল নয়, এটি আমাদের জলজ প্রতিবেশের অংশ। এই ফুল পানির বিশুদ্ধতা ও জীববৈচিত্র্য ধরে রাখতে সহায়তা করে। পুকুরে পদ্মের এমন স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রমাণ করে এটি একদম ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ।
পরিবেশ কর্মী ইমরান হাসান জন বলেন, পুকুরে পদ্ম ফুটে থাকা মানে পরিবেশের শ্বাস নেওয়া। এ ধরনের সৌন্দর্য রক্ষায় স্থানীয়দের অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা চাই, পাখি কলোনি ও পদ্মফুল দুটোই ক্ষেতলালের পরিবেশ সচেতনতার প্রতীক হয়ে উঠুক।
দর্শনার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, প্রতিদিন বিকেলে যারা হাঁটতে আসেন, আবেগভরে বলেন, পুকুরের জলে গোলাপি পদ্মের হাসি দেখলে মনে হয় এই পৃথিবী এখনো কত সুন্দর! এই দৃশ্য মনে শান্তি আনে, আত্মাকে ছুঁয়ে যায়। সান বাধানো পুকুর পাড়ে বসে দুদ্বন্ড সময় কাটান।
পাখি কলোনির গাছের ডালে ঝুলছে শত শত মাটির হাড়ি, আশ্রয় নিয়েছে নানা প্রজাতির পাখি। সকালে পাখির ডাকের সঙ্গে পদ্মফুলের হাসি মিলে তৈরি হয় নতুন দিনের আলোয় জেগে ওঠার আশা। ক্ষেতলালের পাখি কলোনি আজ শুধু প্রকৃতি প্রেমীদের নয়, প্রতিটি প্রাণের ভালোবাসার স্থান। এখানে ভোরের আলোয় ফুটে থাকা পদ্মফুল যেন শেখায়, প্রকৃতি যত্ন চাইলে সে রঙে, গন্ধে ও সৌন্দর্যে প্রতিদান দেয়।




Comments