Image description

২০২৪ সালের জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পরবর্তী ১৬ মাসে খুলনায় ৪৮টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে সন্ত্রাসীদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ, মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২০ জন। শুধু সদ্য বিদায়ী নভেম্বর মাসেই খুন হয়েছেন ৭ জন। একের পর এক হত্যাকাণ্ডে খুলনা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে।

বিশেষ করে, দিনদুপুরে আদালত চত্বরের মতো সুরক্ষিত ও জনবহুল জায়গায় সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড সাধারণ মানুষকে চরমভাবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।

পুলিশের তথ্য বলছে, গত ১৬ নভেম্বর দুপুরে নগরীর ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কমিশনারের কালভার্ট এলাকায় বাড়ির মধ্যে নানি মহিতুন্নেসা (৫৫), তার নাতি মুস্তাকিম (৮) এবং নাতনি ফাতিহাকে (৬) হত্যা করা হয়। ওই রাতেই করিমনগরে নিজ বাড়ির ভেতর আলাউদ্দিন মৃধা নামের এক যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

২৭ নভেম্বর রাতে খালিশপুর ফেয়ার ক্লিনিকের সামনে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় ইমান নামের এক যুবককে।

সর্বশেষ রবিবার (৩০ নভেম্বর) আদালত চত্বরে আরও দুটি খুনের ঘটনা ঘটল।

একের পর খুনে উদ্বিগ্ন নাগরিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ধারাবাহিক হত্যা ও সহিংস ঘটনার প্রতিবাদে খুলনা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। এ ছাড়া আইনশৃখলা পরিস্থিতি অবনতির প্রতিবাদে গত শনিবার নগরীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে আইন অধিকার বাস্তবায়ন ফোরাম।

তার এক দিন পরেই আরও দুটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নব্বইয়ের দশকের শেষ দিকে চরমপন্থীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছিল খুলনা। নতুন শতাব্দীর শুরুতেও তা বহাল ছিল। বোমা মেরে অথবা গুলি করে মানুষ হত্যা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়। চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ হারায় সাংবাদিকসহ অসংখ্য মানুষ।

পরবর্তীতে তৎকালীন চার দলীয় জোট সরকার দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশের সন্ত্রাস দমনে র‌্যাব গঠন করে। যৌথবাহিনীর সমন্বয়ে শুরু হয় অপারেশন ক্লিনহার্ট, অপারেশন স্পাইডার ওয়েব। এসব অভিযানে অধিকাংশ চরমপন্থী নিহত হন, অনেকে গ্রেপ্তারও হন। ধীরে ধীরে শান্তি ফিরে আসে খুলনাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে।

খুলনার আইনশৃখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আবারও বিশেষ অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছেন নাগরিক নেতারা।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ‘বেশিরভাগ হত্যার কারণ উদ্ঘাটন করা হয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। এই (আদালত চত্বরে) হত্যার সঙ্গে জড়িতরাও দ্রুত গ্রেপ্তার হবেন।’

তথ্যসূত্র : ইউএনবি