সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে জামায়াতের এমপি প্রার্থীর ওপর হামলা, আহত ৫০
সিরাজগঞ্জ-১ (কাজিপুর ও সদর আংশিক) আসনে নির্বাচনী প্রচারণা ঘিরে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে সোনামূখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ি গ্রামে ইসলামী জালসায় অংশ নিতে গেলে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী ও সিরাজগঞ্জ জেলা আমীর মাওলানা শাহিনুর আলমের উপর হামলার অভিযোগ উঠেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোনামূখী ইউনিয়নের স্থলবাড়ি গ্রামে একটি ইসলামী জালসা চলছিল। সেখানে অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত ছিলেন জামায়াতের এমপি প্রার্থী মাওলানা শাহিনুর আলম। তিনি মঞ্চে ওঠার আগমুহূর্তে বিএনপির প্রার্থী সেলিম রেজার উপস্থিতিতে তার অনুসারী ও নেতা-কর্মীরা হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।
হামলার শিকার কয়েকজন জানান, পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে গেলে স্থানীয় জনগণ এগিয়ে এসে হামলাকারীদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন। কিছু সময় পর পরিস্থিতি সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আসে এবং শাহিনুর আলম জালসায় বক্তব্য দেন।
বক্তব্য শেষে রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে শাহিনুর আলমের গাড়িবহর সোনামূখী ইউনিয়ন ছাড়ার সময় পুনরায় হামলার মুখে পড়ে। অভিযোগ অনুযায়ী, দেশীয় অস্ত্র, লাঠিসোঁটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলাকারীরা অতর্কিতভাবে গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে আক্রমণ চালায়।
এই ঘটনায় প্রায় ৫০–৬০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে সোনামূখী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি নজরুল ইসলামসহ অন্তত ৪–৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গুরুতর আহতদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রথম দুই হামলার পর রাতেই সোনামূখী বাজার এলাকায় আবারো দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। হঠাৎ ধাওয়া–পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটলে বাজার এলাকায় পুরোপুরি আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ব্যবসায়ীরা দ্রুত দোকানপাট বন্ধ করে দেয়, পথচারীরা নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়।
জামায়াত নেতারা দৈনিক মানবকণ্ঠ কে করে বলেছেন, “এটি পরিকল্পিত রাজনৈতিক হামলা। এমপি প্রার্থী শাহিনুর আলমকে নির্বাচনী প্রচারণা থেকে দূরে সরানোর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েছে।”
তাদের দাবি, “বিএনপির প্রার্থীর সামনেই এই হামলাগুলো সংঘটিত হয়েছে এবং তিনি তা ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেননি।”
এ ঘটনায় বিএনপির স্থানীয় নেতারা দাবি করেছেন, “জামায়াত আগে উত্তেজনা সৃষ্টি করে। আমাদের নেতাকর্মীদের উসকানি দিলে সামান্য ধাক্কাধাক্কির ঘটনা হয়। বড় ধরনের হামলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।”
ঘটনার পরপরই কাজিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ জানিয়েছে—“হামলা–সংঘর্ষের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। দুই পক্ষের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অনুসন্ধান শেষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।




Comments