Image description

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) জুলাই গণঅভ্যুত্থানবিরোধী হিসেবে অভিযুক্ত আওয়ামীপন্থী কিছু শিক্ষকের অধ্যাপক পদে পদোন্নতির উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন—এমন অভিযোগ তুলেছেন ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি, এই প্রক্রিয়া মূলত "ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের প্রচেষ্টা"। ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট ঐ সকল শিক্ষকদের বিরুদ্ধে জুম মিটিংয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে ও জুলাই আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

মঙ্গলবার রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের নিকট এক লিখিত আবেদন জমা দিয়ে শিক্ষার্থীরা এই পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।

আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯০তম সিন্ডিকেট সভায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনবিরোধী ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে একটি পদোন্নতি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভাষায়, "এটি ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসনের অংশ।"

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, জুলাই আন্দোলনের সময় ফ্যাসিবাদবিরোধী অবস্থানের কারণে তারা দীর্ঘদিন ধরে ওই আন্দোলনবিরোধীদের বিচারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু প্রশাসন সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না নিয়ে বরং তাদের পুরস্কৃত করছে।

তারা আরও দাবি করেন, "পূর্বের উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের সময়েও ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গে আপসের চেষ্টা হয়েছিল, যার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামে। সেই আন্দোলনের ফলেই উপাচার্য পরিবর্তন হয়। কিন্তু নতুন প্রশাসনও একই পথে হাঁটছে।"

আবেদনে শিক্ষার্থীরা আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে তীব্র সেশনজট ও শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। ৫১টি শূন্য প্রভাষক পদের বিপরীতে মাত্র ১০ জন নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, যা একাডেমিক চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। "অথচ প্রশাসন একাডেমিক সংকট সমাধানের বদলে বিতর্কিত পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিচ্ছে"—বলেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই আন্দোলনবিরোধী ব্যক্তিদের বিচারের উদাহরণ থাকলেও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। বরং এসব ব্যক্তিদের বিভিন্ন একাডেমিক ও প্রশাসনিক পদে বসানো হয়েছে, যা তাদের মতে "জুলাই-আগস্টের শহীদদের প্রতি অবমাননা"।

আবেদনের শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে দাবি জানিয়েছেন—শিক্ষক সংকট নিরসন ও একাডেমিক সমস্যা সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়ে অবিলম্বে "ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন প্রক্রিয়া" বন্ধ করতে হবে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী শিক্ষার্থীদের পক্ষে আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেছেন—এস. এম. ওয়াহিদুর রহমান, মো. শরীফ উল্লাহ, রবিউল ইসলাম, মো. মাইনুল ইসলাম ও মোস্তফা শাহরিয়ার।