বাউলশিল্পী আবুল সরকারের গ্রেপ্তার ও সারাদেশে বাউলদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ‘বাউলের দ্রোহ’ শিরোনামে গতকাল রোববার রাতে বিচারগানের আসরের আয়োজন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। তবে অনুষ্ঠানটি জোরপূর্বক ও ‘মব সৃষ্টি’ করে বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।
গতকাল (রোববার) রাত পৌনে দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে ‘বাউলের দ্রোহের’ মঞ্চে গিয়ে আয়োজকদের গান বন্ধ করতে বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম। এসময় আয়োজকদের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়।
প্রশাসন বলছে, গানের উচ্চ শব্দে কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও ঘুমের সমস্যা হচ্ছিল-এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজকদের গানের আসর বন্ধের অনুরোধ জানানো হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম বলে দাবি করেছেন আয়োজকেরা-যেখানে একজন প্রক্টরকে মঞ্চে উঠে গান বন্ধ করতে দেখা গেল। আয়োজকদের একজন নবীন কিশোর গোস্বামী বলেন, ‘রাত নয়টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিযোগ ও প্রক্টর স্যারের কল পাওয়ার পর আমরা সাউন্ড কমিয়ে দেই। রাত ১০টার দিকে আউটপুটের সাউন্ডও বন্ধ করে দেই। তখন শুধু মনিটরের সাউন্ডে অনুষ্ঠান চলছিল।’
আয়োজক ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ‘বাউলের দ্রোহ’ শিরোনামে গানের অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাত ৯টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক ফেসবুক গ্রুপে গানের উচ্চ শব্দে পড়াশোনা ও ঘুমের সমস্যা হচ্ছে বলে কয়েকজন শিক্ষার্থী পোস্ট করেন। রাত ১০টার দিকে প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় আয়োজকদের শব্দ কমানোর এবং রাত ১১টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করার অনুরোধ জানানো হয়। এরপর আয়োজকেরা শব্দ কমিয়ে অনুষ্ঠান চালাতে থাকেন।
অনুষ্ঠান বন্ধে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভিন্নভাবে প্রশাসনের ওপর চাপ প্রয়োগ করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন আয়োজকরা। গভীর রাতে উচ্চ শব্দে গান বাজানোর প্রতিবাদে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এসে গান বাজান কয়েকজন শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, ‘সন্ধ্যার পর থেকেই অনেক শিক্ষার্থী উচ্চ শব্দ নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। কারণ, তাদের পরীক্ষা চলছে, এখন পরীক্ষার মৌসুম। অনেক শিক্ষার্থী গানের উচ্চ শব্দে মাইগ্রেনের সমস্যার কথাও জানিয়েছেন। তার পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজকদের শব্দ কমাতে বলেছিলাম।’




Comments