সুনামগঞ্জে মসজিদের টাকা আত্মসাৎ করে যুক্তরাজ্যে পালানো আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া নতুন জামে মসজিদের তহবিল আত্মসাতের প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা শামসুল ইসলাম রাজার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন এলাকার মুসল্লি ও সর্বস্তরের জনগণ। শুক্রবার বিকেলে মসজিদ প্রাঙ্গণে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়, যেখানে বক্তারা রাজার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া বক্তারা অভিযোগ করেন যে, ২০২২ সালে শামসুল ইসলাম রাজা তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জোরপূর্বক পাথারিয়া নতুন জামে মসজিদের মুতাওয়াল্লির (তত্ত্বাবধায়ক) দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি মসজিদের তহবিল থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা আত্মসাৎ করে নিজের কাছে রেখে দেন। বক্তাদের দাবি, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, শামসুল ইসলাম রাজা ওই আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত না দিয়েই তড়িঘড়ি করে যুক্তরাজ্যে পালিয়ে যান।
বক্তারা আরও জানান, মসজিদের তহবিল থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা আত্মসাৎ হওয়ায় বর্তমানে মসজিদ কর্তৃপক্ষ চরম আর্থিক সংকটে ভুগছে। এই সংকটের কারণে ইমাম ও মুয়াজ্জিনের বেতন পরিশোধ করতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া, অর্থের অভাবে মসজিদের গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কাজ, যেমন—বাউন্ডারি দেয়াল সংস্কার, প্রবেশপথ নির্মাণ এবং অন্যান্য জরুরি কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে মসজিদের স্বাভাবিক কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে এসেছে এবং মুসল্লিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মানববন্ধনে মসজিদের সাবেক ইমাম মাওলানা জয়নুল ইসলাম, সাবেক মুতাওয়াল্লি ইজাজুল ইসলাম, মসজিদ কমিটির সভাপতি তারা মিয়া, ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, শামছুল ইসলাম ও মনির হোসেন বক্তব্য দেন। বক্তারা শামসুল ইসলাম রাজার এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানান এবং দ্রুত আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।
এছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল কাইয়ুম, নুর মিয়া, মোশাহিদ মিয়া, সবদুল মিয়া, মতি মিয়া, হাফিজ উল্লাহ, রইস আলী, হাবিবুর রহমানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং বিপুল সংখ্যক মুসল্লি মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন। তারা সবাই এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত শামসুল ইসলাম রাজা ২০২১ সালের ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করায় এই অভিযোগের বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তার অনুপস্থিতি এই অভিযোগগুলোকে আরও জোরালো করেছে এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
Comments