
কয়েকটি নদীর পানি বাড়তে থাকায় ফেনীর নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এর মধ্যেই প্লাবিত হতে পারে লালমনিরহাট, নীলফামারী, শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণার নিম্নাঞ্চল।
বৃহস্পতিবার সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে ফেনী জেলার মুহুরী, সেলোনিয়া ও ফেনী নদীর পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা হতে পারে। চট্টগ্রাম জেলায় ফেনী নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে এবং নদীসংলগ্ন নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাতে বুলেটিনে বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর ও পাশের উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে প্রথমে নিম্নচাপ এবং পরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার রাত নাগাদ ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের অভ্যন্তরে বরিশাল, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু স্থানে ভারি থেকে অতি-ভারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনায় ১১৯ মিলিমিটার, নীলফামারীর ডালিয়ায় ৭৮ মিলিমিটার এবং জামালপুরে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করা হয়েছে।
তবে উজানে ভারতে উল্লেখযোগ্য ভারি বৃষ্টিপাত হয়নি। আগামী দুদিন দেশের অভ্যন্তরে এবং উজানে ভারতের প্রদেশগুলোতে বিচ্ছিন্নভাবে ভারি থেকে অতি ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র বলছে, রংপুর বিভাগের তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি সমতল আগামী তিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময়ে তিস্তা নদীর পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে; প্লাবিত হতে পারে লালমনিরহাট ও নীলফামারীর নিম্নাঞ্চল।
অন্যদিকে ময়মনসিংহ বিভাগের সোমেশ্বরী, ভুগাই ও কংস নদীর পানি সমতল আগামী তিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময়ে সোমেশ্বরী, ভুগাই-কংস নদীর পানি শেরপুর, ময়মনসিংহ ও নেত্রকোণায় সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে; প্লাবিত হতে পারে নদীর আশপাশের নিম্নাঞ্চল।
বুলেটিনে বলা হয়েছে, বরিশাল, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় নদীগুলোতে স্বাভাবিকের থেকে উঁচু জোয়ার আছে, যা আগামী দুদিন থাকতে পারে।
অববাহিকাগুলোর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি আগামী একদিন কমে পরবর্তী চারদিন বাড়তে পারে। তবে তা বিপৎসীমার নিচে থাকার কথা বলে মনে করছে সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আর গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি আগামী দুদিন কমে পরবর্তী তিন দিন বাড়তে পারে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানিও সমতল আগামী তিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
এছাড়া রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের আত্রাই, পুনর্ভবা, করতোয়া, যমুনেশ্বরী, মহানন্দা, ঘাঘট, করতোয়া, আত্রাই ও টাঙ্গন নদীর পানি আগামী তিন দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
আর সিলেট বিভাগের মনু, খোয়াই, ধলাই, সারিগোয়াইন ও যাদুকাটা নদীর পানি আগামী দুদিন বেড়ে তৃতীয় দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে। চট্টগ্রাম বিভাগের হালদা, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদীর পানি আগামী দুদিন বেড়ে তৃতীয়দিন কমতে পারে।
Comments