অভয়নগরে পানের ভালো ফলনেও দাম কম, উৎপাদন খরচ নিয়ে চাষীদের দুশ্চিন্তা

যশোরের অভয়নগর উপজেলায় পানের চাষ বৃদ্ধি পেলেও কম দামের কারণে উৎপাদন খরচ উঠানো নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা। স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্রি হচ্ছে এখানকার পান। তবে ভালো ফলন সত্ত্বেও বাজারে পানের দাম না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশ।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, অভয়নগরে ঝালপান ও সাচী পানের চাষ হয়। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৫০৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭,৮০০ মেট্রিক টন। পানের সুস্বাদু গুণের কারণে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এখানে পান কিনতে আসেন। লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছর এখানে পানের চাষ বাড়ছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে দেখা গেছে, পানের বরজে চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও বাজারে কম দামের কারণে তাদের মুখে হাসি নেই। সিদ্ধিপাশা গ্রামের চাষী সাজেদুল ফারাজি বলেন, “এ বছর পানের ফলন ভালো হলেও সুপারির দাম বৃদ্ধি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে পান রপ্তানি বন্ধ থাকার প্রভাবে বাজার হারিয়েছে। ফলে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।”
একই গ্রামের আরেক চাষী শোভন শেখ বলেন, “গত বছর এক পোন (৮০টি) পানের দাম ছিল ১৫০ টাকা, এখন তা ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। আমার জীবনে পানের এত কম দাম দেখিনি।” তিনি আরও জানান, পান চাষীদের জন্য কোনো সরকারি প্রকল্প বা প্রণোদনা নেই, যা চাষিদের উৎসাহ হারাতে বাধ্য করছে।
চাষিরা জানান, অভয়নগরে পান চাষে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। ফসলি ও পতিত জমিতে পানের চাষ হচ্ছে। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও সরকারি সহায়তার অভাবে অনেকে এই চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলী খাতুন বলেন, “অভয়নগরে নিরাপদ পান চাষের জন্য কোনো প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হলে পান চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে।”
পান চাষিদের দাবি, সরকারি প্রণোদনা ও প্রকল্পের মাধ্যমে পানের বাজার সম্প্রসারণ ও ন্যায্য দাম নিশ্চিত করা গেলে এই সম্ভাবনাময় খাত আরও সমৃদ্ধ হবে।
Comments