Image description

একসময় গ্রামীণ অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক মিলনমেলার প্রাণকেন্দ্র ছিল মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর হাট। কিন্তু এখন সেই চিত্র বদলে গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ সংস্কারের অভাবে হাটের টোলঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় হারিয়ে যেতে বসেছে এ হাটের সেই জৌলুস। তাই ঐতিহ্যবাহী এ হাট টিকিয়ে রাখতে দ্রুত টোলঘর মেরামত করার দাবী এলাকাবাসীর। আর পৌর প্রশাসক বলছে দ্রুতই নেয়া হবে কার্যকরী ব্যবস্থা।

মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার গোপালপুর এলাকায় প্রায় দেড়শ বছর যাবৎ সপ্তাহে সোমবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিন বসে ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর হাট। এক সময় দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষের পদচারণায় মুখর থাকত এ হাট। মানুষজন তাদের বিভিন্ন ধরনের সামগ্রী এ হাটে কেনা-বেচা করতো। এক সময় নৌপথেও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পণ্য আসত। প্রতি হাটে হাজার হাজার লোকজনের ভিড় লেগেই থাকতো। এখন সেসব অতীত। কারণ দীর্ঘদিন ধরে হাটের টোলঘরগুলো পড়ে রয়েছে জরাজীর্ণ অবস্থায়। টোলঘরের খুঁটিগুলোর পলেস্তরা খোসে বেড়িয়ে এসেছে রড। উপরের টিনগুলো জং পড়ে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে টোলঘরগুলো।

এমন অবস্থায় ঝুঁকি এড়াতে বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীদের বসতে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। এদিকে বৃষ্টি হলে তাদের পণ্য গুলো ভিজে নষ্ট হয়ে যায়।মাথার উপরে পলিথিন বেঁধে তারা রোদ বৃষ্টিতে রক্ষা পায়। তাই তারা পণ্য নিয়ে এ হাটে আসার আগ্রহ দিন দিন হারিয়ে ফেলছে।আর প্রয়োজনীয় পণ্য না পাওয়ায় ক্রেতারাও হাটে আসা কমিয়ে দিয়েছে। 

আগে এ হাটের মাছ বাজারে যা লোক হতো, এখন পুরো হাট মিলেও সেই লোক হয়না বলে জানান এলাকাবাসী। তাদের কাছে হাটের দিনটি এখন ক্যালেন্ডারে লেখা একটা দিন মাত্র। তাই ঐতিহ্যবাহী হাটটিকে বাঁচিয়ে রাখতে দ্রুত টোল ঘর সংস্কার সহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী হাটের ক্রেতা বিক্রেতা ও এলাকাবাসীর।

এদিকে হাটের ইজারাদাররা জানান, ঐতিহ্যবাহী হাটটিকে টিকিয়ে রাখতে টোলঘর সংস্কারের জন্য বারবার পৌরসভা ও প্রশাসনকে বলা হলেও নেয়া হচ্ছে না কোন কার্যকরি ব্যবস্থা। এভাবে চলতে থাকলে তারা লসের সম্মুক্ষীণ হবার পাশাপাশি হাটটিও বিলীন হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক সাইফ উল আরেফিন বলেন, ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর হাটের টোলঘর গুলো জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সুবিধার্থে ও হাটটিকে টিকিয়ে রাখতে দ্রুতই টোলঘর গুলো সংস্কার করা হবে ।

গ্রামীণ হাট বাজার গুলো এদেশের সংস্কৃতির একটা অংশ। এখনকার প্রজন্ম অনেকেই এসব হাটের ইতিহাস জানেনা। তাই ঐতিহ্যবাহী পুরাতন এ হাট টিকিয়ে রাখতে শুধু আশ্বাস নয়, দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী এলাকাবাসীর।