Image description

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জেলা পরিষদের একটি পুকুর দখল ও মাছ লুটের অভিযোগ উঠেছে৷ এদিকে সরকারি স্বার্থ রক্ষা ও বিধি মোতাবেক পুকুরটি ইজারার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ভাঙ্গাবাড়ি ইউনিয়নের শেলবর্ষ মৌজায় আরএস ২২২/২ নং খতিয়ানের ৪৫৭ দাগে ১ দশমিক ৭৬ একর আয়তনের একটি পুকুর বাংলা ১৪৩১ সন থেকে তিন বছরের জন্য ইজারা দেয় সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদ। কিন্তু ইজারার বিরুদ্ধে ২০২৪ সালের ১৫ মে আদালতে মামলা দায়ের করেন ওই গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বার মন্ডলের ছেলে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ।

ওই মামলায় বলা হয়- জেলা পরিষদের সম্পত্তি (অর্জন, ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষন ও হস্তান্তর) বিধিমালা ২০১৭ অনুযায়ী চেয়ারম্যান, সদস্য ও পরিষদের কর্মচারীরা তাদের আত্নীয়ের নিকট সম্পত্তি হস্তান্তর বা ইজারা প্রদান করতে পারবে না। কিন্তু তাৎকালীন জেলা পরিষদের সদস্য নারগিস খাতুন নিয়মবর্হিভূতভাবে তার জামাতা আব্দুল আওয়ালের নামে ইজারা নেন। পরে মামলার প্রেক্ষিতে আদালত গত বছরের ২১ আগস্ট ইজারার বিরুদ্ধে মোকদ্দমা চালাকালীন অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেন।

মামলার বাদী মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ অভিযোগ করে বলেন, আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা থাকা শর্তেও আব্দুল আওয়াল ও তার লোকজন পুকুরে থাকা প্রায় তিন লাখ টাকা মূল্যের মাছ বিক্রি করে তা আত্মসাৎ করেছে।

স্থানীয়রা বলছেন, জেলা পরিষদের সরকারি ওই পুকুরটি মোহাম্মদ আলী জিন্নার ভাই ইয়াকুব আলী ও তার ছেলে মহিউদ্দিনের নামে পর্যায়ক্রমে ইজারা নিয়ে আসছিল। কিন্তু গত বাংলা ১৪৩০ সনের চৈত্র মাসে সেই ইজারার মেয়াদ শেষ হয়। পরবর্তী বাংলা ১৪৩১ থেকে ১৪৩৩ সন পর্যন্ত এক লাখ ২১ হাজার ৪০০ টাকা মূল্যে ইজারা পান একই উপজেলার চর চালা গ্রামের আব্দুল আওয়াল। পরে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ দরপত্রে অনিয়য়ের অভিযোগ এনে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে সাতজনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন (মামলা নং- ৩৫/২০২৪)। এ মামলার প্রেক্ষিতে আদালত ইজারা বন্দোবস্তে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রদান করেন। পরবর্তীতে আব্দুল আওয়াল গ্রামের কিছু লোকদের সঙ্গে নিয়ে পুকুরটি দখলে নেন।

ইয়াকুব আলী জানান, পুকুরের চার পাশে তিনিসহ আরও কয়েক জনের জমি রয়েছে। এসব জমির কিছু অংশ পুকুর পাড়ের সঙ্গে মিশে গেছে। এতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অথচ জেলা পরিষদ তাদের কথা বিবেচনা না করে অন্য এলাকার লোককে পুকুরটি ইজারা দিয়েছিল। পরে আদালত সেটাকে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। তারপরও আব্দুল আওয়াল রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় পুকুরটি দখলে রেখেছেন।

এদিকে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোছাঃ আফসানা ইয়াসমিন বলছেন, ওই পুকুরে কিছু আইনী জটিলতা রয়েছে। এ জটিলতা দূর হলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।