Image description

গাজীপুরের শ্রীপুরে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‍্যাব-১) ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের সময় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝির জেরে অবরুদ্ধ ছিলেন র‍্যাব-১ এর সদস্যরা। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুর ১১টার দিকে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা বাজার সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

ওই এলাকার মোঃ সোহেল রানার মালিকানাধীন সততা এন্টারপ্রাইজ ও মোঃ মারুফের বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের গুদামে র‍্যাব অভিযান চালায়। অভিযান ওই দুটি গুদাম থেকে নকল প্রসাধনী, আমদানিকারকের তথ্য ব্যতীত ও ড্রাগ জাতীয় প্রসাধনী জব্দ করে। ওই গুদাম থেকে এ পণ্যগুলো বিপণন করা হচ্ছিল। পরে র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে মেসার্স সততা এন্টারপ্রাইজকে তিন লাখ টাকা জরিমানা ও মেসার্স বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পাশাপাশি ওই প্রতিষ্ঠানের দুটি গুদাম থেকে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন ধরনের নকল প্রসাধনী জব্দ করা হয়, যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২০ লাখ টাকা বলে জানায় র‍্যাব। র‍্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবু হাসান ও শাহ মোহাম্মদ জোবায়ের, র‍্যাব পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোঃ নাফিজ বিন জামাল, বিএসটিআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা (সিএম) অর্ণব চক্রবর্তী ও ফাহাদ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

অভিযানে উপস্থিত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল কোনো তালিকা ছাড়াই নিয়ে যায় র‍্যাব সদস্যরা। ওই সময় ব্যবসায়ীরা অভিযানে থাকা দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে বিনা কারণে মালামাল জব্দের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও স্লোগান দেন। এতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে র‍্যাবের গাড়িগুলো ঘিরে ফেলেন। এসময় মাওনা-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়কে ঘন্টাখানেক যান চলাচল বন্ধ থাকে। র‍্যাবের গাড়িগুলো আটকে ব্যবসায়ী ও স্থানীয় লোকজন অবস্থান নিয়ে স্লোগান দেন।

খবর পেয়ে শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে র‍্যাব সদস্য ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন।
বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক মোঃ মারুফ বলেন, তাঁরা দোকানে ঢুকেই কথা না শুনে একের পর এক মালামাল জব্দ করতে শুরু করেন। এমনকি বৈধ কসমেটিক পণ্যের কাগজপত্র দেখালেও তারা মানেননি। আমি জানি, ওই দলে একজন এমন ব্যক্তি ছিলেন যিনি আগে আমাদের কাছে তার কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমরা না বলায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আজকের অভিযান করিয়েছেন।

অভিযানের সময় উপস্থিত থাকা ইউনিলিভারের প্রতিনিধি মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা যেসব পরিবেশকের কাছে পণ্য বিক্রি করি, সবই অনুমোদিত। তাই এসব পণ্য অবৈধ হতে পারে না। রসিদ বা কাগজ না দেখে জব্দ করলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ে।

গাজীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মোঃ মেরাজুল ইসলাম বলেন, র‍্যাব সদস্যরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের দায়িত্ব পালন করছিলেন। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি হয়। বিশেষ করে অভিযানে দু’জন সিভিল পোশাকের ব্যক্তি উপস্থিত থাকায় সন্দেহ তৈরি হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে র‍্যাব সদস্যদের মুক্ত করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, অভিযানে থাকা সিভিল পোশাকের দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে।

ওসি মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতে যে ব্যক্তি জড়িত হয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছিল তারা ভ্রাম্যমাণ আদালতের লোক। ব্যবসায়ীরা নিশ্চিত হওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে।

এ বিষয়ে জানতে র‍্যাব-১ এর পোড়াবাড়ী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট নাফিজ বিন জামালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।