চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। তবে উদ্বোধনের অপেক্ষায় পড়ে আছে প্রায় ছয় মাস ধরে। গত ২২ মার্চ ইমাম ও খাদেম নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন না হওয়ায় মসজিদে নামাজ ও অন্যান্য কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। এতে নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম ও খাদেম বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে জানা গেছে।
গণপূর্ত বিভাগের একাধিক সূত্র জানায়, দেশে ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় ২০১৮ সালের শেষের দিকে মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভায় এই মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজের দায়িত্বে ছিল ঢালী কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান, আর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মডেল মসজিদের পাশে অবস্থিত ছেংগারচর সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় মুসল্লিরা হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, ‘এত সুন্দর মসজিদ দাঁড়িয়ে আছে, অথচ নামাজ পড়ার সুযোগ নেই এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
স্থানীয় মুসল্লি মোহাম্মদ হোসেন ও সোহাগ মিয়া বলেন, ‘মসজিদে নামাজ শুরু না হওয়ায় আমরা প্রতিদিন হতাশ হচ্ছি। সরকারের এত বড় প্রকল্পের সুফল এখনো পাইনি। আমাদের প্রত্যাশা দ্রুত উদ্বোধন করা হোক।’
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতলব উত্তর উপজেলা সহকারী ফিল্ড সুপারভাইজার মাওলানা আফজাল হোসেন খান বলেন, ‘নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার পর থেকে ইমাম ও খাদেমদের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি। তারা এখনো কোনো বেতন পাচ্ছেন না। উদ্বোধন না হওয়ায় তাদের পদ কার্যকর হয়নি। আশা করছি, খুব শিগগিরই উদ্বোধন হলে তাদের ভাতা ও বেতন চালু হবে।’
নিয়োগপ্রাপ্ত ইমাম মুফতি আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আল্লাহর ঘরে ইমামতি করার দায়িত্ব পেয়েও গত ছয় মাস ধরে শুধু অপেক্ষা করছি। সংসারে অভাব-অনটন চলছে। কেউ আমাদের দায়িত্ব নিচ্ছে না, অথচ অনেক আগেই নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এই মসজিদের।’
খাদেম আব্দুল কাদের বলেন, ‘পরিবার-পরিজন নিয়ে এখন ভাড়া বাসায় থাকছি। চাকরি পেয়ে খুশি হয়েছিলাম, কিন্তু ছয় মাসেও কাজ শুরু করতে পারিনি। আয় না থাকায় ধারদেনায় দিন চলছে।’
এদিকে, গণপূর্ত বিভাগের একজন প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘কাজের কিছু জায়গায় ত্রুটি পাওয়া গেছে। সংশোধনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে।’
অন্যদিকে, এ বিষয়ে মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি বলেন, ‘নির্মাণ কাজে কিছু কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়েছে। সেটি সংশোধনের জন্য সময় লাগছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক হলে খুব শিগগিরই উদ্বোধনের তারিখ নির্ধারণ এবং কার্যক্রম চালু করা হবে।’
Comments