Image description

বরিশাল সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের রাজারচর (জমোদ্দার বাড়ি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন জানানো হলেও কোনো সাড়া মিলছে না বলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ভোটার সংখ্যা বৃদ্ধি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার অসুবিধার কারণে রাজারচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র স্থানান্তরের দাবি জানানো হয়েছে। তবে, এই আবেদন দুই নির্বাচন কর্মকর্তার মধ্যে আটকে আছে বলে অভিযোগ।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর শাকিল রাঢ়ী জানান, পূর্বে ৪, ৫ ও ৬নং ওয়ার্ডের ভোটারদের জন্য রাজারচর (জমোদ্দার বাড়ি) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তখন এটি তিনটি ওয়ার্ডের মাঝখানে অবস্থিত ছিল, যা ভোটারদের জন্য সুবিধাজনক ছিল। কিন্তু ৪নং ও ৬নং ওয়ার্ড পৃথক হওয়ার পর শুধুমাত্র ৫নং ওয়ার্ডের ভোটারদের জন্য এই কেন্দ্রটি ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে, এটি এখন দুর্গম এবং অসুবিধাজনক হয়ে উঠেছে।

শাকিল আরও জানান, বর্তমান ভোট কেন্দ্রের আশপাশে মাত্র ২০ শতাংশ ভোটারের বসবাস, যেখানে প্রস্তাবিত রাজারচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারপাশে ৮০ শতাংশের বেশি ভোটার রয়েছেন। প্রস্তাবিত কেন্দ্রে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা, বড় পরিসরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং খেলার মাঠ রয়েছে, যা ভোট গ্রহণের জন্য উপযুক্ত। তিনি বলেন, “বর্তমান কেন্দ্রটি ছোট, অপর্যাপ্ত এবং নিরাপত্তার দিক থেকেও ঝুঁকিপূর্ণ। ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই কেন্দ্রে একজন প্রার্থীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল।”

গত সেপ্টেম্বরে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবির প্রেক্ষিতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে কেন্দ্র পরিবর্তনের আবেদন জানানো হয়। কিন্তু শাকিল অভিযোগ করেন, আবেদনের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, “জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছে যেতে বলেন, আর বিভাগীয় কর্মকর্তা জেলা কর্মকর্তার কাছে ফিরিয়ে দেন। এভাবে আবেদনটি দুই কর্মকর্তার মধ্যে আটকে আছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা মনির খালাসী, বেলায়েত সিকদার, তরিকুল ইসলাম, সমীর বেপারী, রামেশ্বর বনিক ও মাইদুল গাজী জানান, ৫নং ওয়ার্ডে তিন হাজারের বেশি ভোটার রয়েছেন। বর্তমান ভোট কেন্দ্রের যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত খারাপ এবং ভবনটির অবস্থাও জরাজীর্ণ। তারা বলেন, “প্রস্তাবিত রাজারচর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভোট কেন্দ্র স্থানান্তর করা হলে ভোটারদের জন্য সুবিধাজনক হবে। এখানে বেশিরভাগ ভোটারের বসবাস এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভালো।” তারা আরও জানান, কেন্দ্র পরিবর্তন না হলে গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আবেদনের প্রেক্ষিতে সরেজমিন তদন্ত হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে এবং দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রকাশ করা হবে।”

গ্রামবাসীর দাবি, ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের মাধ্যমে নিরাপদ ও সুবিধাজনক ভোটদান নিশ্চিত করা হোক। অন্যথায়, তারা আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবেন বলে জানিয়েছেন।