Image description

নীলফামারীর সৈয়দপুরের প্রসিদ্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজের ১৭০ জন শিক্ষক-কর্মচারী টানা এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বেতন বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি ও যুবদল নেতা মো. জাকির হোসেন মেননের ইচ্ছাকৃত স্বাক্ষর জটিলতা, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বিকালে সৈয়দপুর লায়ন্স স্কুল এন্ড কলেজ হলরুমে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও কর্মচারীবৃন্দের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করা হয়।

প্রতিষ্ঠানটির সিনিয়র শিক্ষক কাজী আসাদুজ্জামান স্বাধীন লিখিত বক্তব্যে জানান, গত বছরের ৮ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর লায়ন্স ক্লাব অব সৈয়দপুরের পাসওয়ার্ড হ্যাক করার মাধ্যমে জাকির হোসেন মেনন নিজেকে ক্লাব প্রেসিডেন্ট দাবি করেন এবং ৪২ জন ক্লাব সদস্যকে ড্রপ আউটের মাধ্যমে পরিবারতান্ত্রিক ক্লাব তৈরি করেন। এছাড়াও লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্তৃত্ব হাতে নিয়ে নানা রকম দুর্নীতি চালিয়ে আসছেন। গত ২৪ সেপ্টেম্বর পরিচালনা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মো. শফিয়ার রহমান সরকার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মসিউর রহমানের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে এক উদ্ভূত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

তিনি আরও জানান, উক্ত উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, থানার ওসি, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ববৃন্দ, অভিভাবক ও ছাত্র-শিক্ষকদের সমন্বয়ে লায়ন্স অডিটরিয়ামে দীর্ঘ আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে লায়ন্স ক্লাব অব সৈয়দপুরের প্রেসিডেন্ট ও যুবদল নেতা মো. জাকির হোসেন মেনন দুর্নীতিপরায়ণ প্রাক্তন পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. শফিয়ার রহমান সরকার ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে নেন।

লিখিত বক্তব্যে কাজী আসাদুজ্জামান স্বাধীন উল্লেখ করেন, ক্লাব প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি ও ট্রেজারারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা এবং সদস্যগণের উপস্থিতি ও সকলের সম্মতিক্রমে তখন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নূর-ই-আলম সিদ্দিকীকে সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এবং মজিবর রহমান চৌধুরীকে অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ঘোষণা করা হয়, যা বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে।

শিক্ষকদের অভিযোগ, উক্ত দিনের সভাস্থলে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন, থানার ওসি, সুশীল সমাজ, বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ববৃন্দ, অভিভাবক ও ছাত্র-শিক্ষকগণ উপস্থিত থাকলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ সকলকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সভায় অনুপস্থিত থাকেন। কিন্তু আজ অবধি স্বাক্ষর না করে কালক্ষেপণ করছেন। এমতাবস্থায় সিগনেটরী অথরিটির অভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং ১৭০ জন শিক্ষক-কর্মচারীগণ বেতন ভাতার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করেও শিক্ষা কার্যক্রমে চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষকরা আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রশাসন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও অভিভাবকগণসহ সৈয়দপুরবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর লায়ন্স ক্লাবের সভাপতি ও যুবদলের নেতা জাকির হোসেন মেননের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মজিবর রহমান চৌধুরী, সিনিয়র শিক্ষক ফেরদৌস আরা, কলেজ প্রভাষক সাজ্জাদ হোসেন, প্রভাষক আব্দুল মান্নান সহ লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজের সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারীবৃন্দ।