সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও জনসাধারণের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে পটুয়াখালী–কুয়াকাটা মহাসড়কের আমতলী অংশে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে আগাছা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। প্রায় শতাধিক স্বেচ্ছাসেবী এ অভিযানে অংশগ্রহণ করেন।
শুক্রবার সকাল ১০টায় ঢাকা–কুয়াকাটা মহাসড়কের ঘটখালী নামক স্থান থেকে অভিযানের সূচনা হয়। স্থানীয় সমাজসেবক ও যুবদল নেতা মোমেন আকন-এর উদ্যোগে এ কর্মসূচিতে অংশ নেন আমতলীর বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের তরুণরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য— আমতলী এসএসসি ২০০৭ ব্যাচ, স্বপ্ন ছোঁয়া স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, আমরা আমতলীবাসী, আমতলী উপজেলা যুবদল, আমতলী কলেজ ছাত্রদল, চাওড়া ইউনিয়ন যুবদল, বাংলাদেশ ছাত্র শিবির, ইসলামী যুব আন্দোলন, স্থানীয় সাংবাদিক ও সাধারণ জনগণ।
দুই ঘণ্টাব্যাপী এ অভিযানে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশের আগাছা ও ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়। অভিযানটি সমাপ্ত হয় আমতলী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সামনে। তবে স্বেচ্ছাসেবীরা জানিয়েছেন, এ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
স্থানীয়রা জানান, তরুণদের এই উদ্যোগে এলাকায় ব্যাপক প্রশংসার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের মতে, এ কাজ সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার করণীয় হলেও তরুণদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় মহাসড়কটি এখন অনেকাংশে নিরাপদ হয়েছে।
আমতলী সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এইচ এম কাওসার মাদবর বলেন, "আমতলী অঞ্চলের প্রায় ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা–কুয়াকাটা মহাসড়কের বিভিন্ন মোড়ে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এলাকাটি কুয়াকাটা পর্যটনকেন্দ্রের প্রধান প্রবেশপথ হওয়ায় যানবাহনের চাপ দিন দিন বাড়ছে। তাই এখানে ছয় লেনের আধুনিক সড়ক নির্মাণ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।"
মোমেন আকন বলেন, "সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ সবার দায়িত্ব। আমরা প্রতিনিয়ত প্রিয়জন হারাচ্ছি—এই বেদনাবোধ থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ। সামান্য সচেতনতা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টা একটি প্রাণ বাঁচাতে পারে। আশা করি, আমাদের এই উদ্যোগ দেখে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তরুণরাও সড়ক নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষায় এগিয়ে আসবেন।"
পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আতিক উল্যাহ বলেন, "যে কাজটি মূলত সড়ক ও জনপথ বিভাগের করার কথা, সেই কাজটি তরুণরা করেছেন—এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে সহায়ক হবে। তরুণরা যদি এমনভাবে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসে, দেশ আরও এগিয়ে যাবে।"
উল্লেখ্য, পটুয়াখালী–কুয়াকাটা মহাসড়কের প্রায় ৩৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার দুই পাশে জমে থাকা ঝোপঝাড়ের কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে ছয় মাস আগে জাতীয় দৈনিকে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হলেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি।




Comments