Image description

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে স্বাভাবিক পরিবেশ থাকলেও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়া চারটি ফ্যাক্টরী চালুর ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এখোনো। চার ফ্যাক্টরীতে শ্রমিক রয়েছেন সাড়ে ছয় হাজার।

বন্ধ হওয়া চার ফ্যাক্টরী হলো; সেকশন সেভেন ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, ইপিএফ প্রিন্টিং লিমিটেড, দেশবন্ধু টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ও মিইগো বাংলাদেশ লিমিটেড।  

গত রবিবার বিকেলে (২৬ অক্টোবর) নোটিশের মাধ্যমে অনির্দিষ্টকালের জন্য ইপিজেডের এই চার ফ্যাক্টরী বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এদিকে সোমবার সকালে ফ্যাক্টরী চালুর দাবীতে শ্রমিকরা ইপিজেড এলাকায় জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করলে শ্রমিকদের সরিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সমস্যা সমাধানে ফ্যাক্টরী কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সাথে আলোচনায় বসতে একটি কমিটি করেছে জেলা প্রশাসন। এতে প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুস সামাদ শিকদারকে।

কিছুদিন থেকে বেতন ভাতা বৃদ্ধি, বোনাসসহ নানা দাবীতে আন্দোলনে নামেন শ্রমিককরা। এক পর্যায়ে রবিবার বিকেলে এই চার ফ্যাক্টরী বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য।

বন্ধ থাকা সেকশন সেভেন এর পরিচালক আতিকুল ইসলাম জানান, এই ফ্যাক্টরীতে সাড়ে তিন হাজার শ্রমিক কাজ করেন। কয়েকদিন থেকে বন্ধ থাকায় এখন তারা আবার চালু করার জন্য একত্র হচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্র্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আমরা ফ্যাক্টরী চালু করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিবো।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর নীলফামারী জেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ জানান, ইপিজেডকে অস্থিতিশীল করার পেছনে ইন্ধন যোগাচ্ছে আওয়ামীলীগ। একটার পর একটা ফ্যাক্টরীতে শ্রমিক আন্দোলন তারই প্রমান। আমরা এনসিপি মালিক ও শ্রমিক পক্ষকে বুঝিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নিচ্ছি বরাবরই। আশা করি কিছু দিনের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার বলেন, এই ইপিজেড আমাদের জাতীয় সম্পদ। এটাকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। অর্থনীতির চাকা সচল রেখেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এখানে যারা কাজ করেন তাদের এবং যারা বিনিয়োগ করেছেন তাদের স্বার্থও যাতে ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

তিনি বলেন, শ্রমিক অসন্তোষের পেছনে যারাই দায়ী তাদের চিহিৃত করে আইনের আওতায় আনা দরকার। তাহলে চক্রান্তকারীরা সাহস পাবে না।

নীলফামারী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য প্রকৌশলী শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বলেন, ইপিজেড রক্ষা করতে হবে। আমরা চাই না ইপিজেড বন্ধ হোক। হাজার হাজার শ্রমিক এখানে কাজ করছেন।

তিনি বলেন, একটি দল ষড়যন্ত্র করছেন ইপিজেড নিয়ে, তাদের ষড়যন্ত্র সফল হতে দেয়া যাবে না। এজন্য সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

নীলফামারী থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) এম আর সাঈদ জানান, ইপিজেডের পরিবেশ স্বাভাবিক রয়েছে। আইনশৃৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে যাতে কোন অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। সার্বক্ষনিক মনিটরিং করা হচ্ছে ইপিজেডকে।

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, সমস্যা সমাধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে একটি কমিটি করা হয়েছে। এতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ রয়েছেন। এই কমিটি বন্ধ হওয়া চার ফ্যাক্টরী ও শ্রমিকদের সাথে আলাদা আলাদা ভাবে আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবে।

প্রসঙ্গত উত্তরা ইপিজেডের ২৭টি ফ্যাক্টরীতে ৩৫হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছেন।