Image description

মাত্র দেড় লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ১০ লক্ষ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন ভোলার কলেজ ছাত্র মো. ইসমাইল হোসেন। তার এই সাফল্য দেখে স্থানীয় অনেক তরুণ শিক্ষিত যুবক এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।

ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের পাকার মাথা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পূর্ব দিকে ছায়াঢাকা শান্ত সুনিবিড় গ্রাম মাঝিকান্দি। এই গ্রামের কৃষক মিলন মাঝির ছেলে মো. ইসমাইল হোসেন। স্থানীয় নাজিউর রহমান কলেজের স্নাতক শ্রেণির ছাত্র তিনি। শৈশব থেকেই পিতার পাশাপাশি কৃষি কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। গত বছর তার পিতা দুই একর জমি কেনেন মাছের ঘের করার জন্য। স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এ.বি.এম. মোস্তফা কামাল-এর পরামর্শে ওই ঘেরের পাড়ে ইসমাইল করেছেন পেঁপে চাষ। আর প্রথমবারেই বাজিমাত করেছেন ইসমাইল হোসেন।

ইসমাইল জানান, ছয় ফুট পরপর পেঁপে চারা লাগিয়েছেন। তিনি প্রতিটি পেঁপে চারা ৫০ টাকা দরে ৪০০ চারা কিনেছেন। চারা গাছের দাম, সেই সাথে সার, কীটনাশক, শ্রমিক সব মিলিয়ে ব্যয় করেছেন এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা। চারা রোপণের ছয় মাস পর থেকে পেঁপে বিক্রি শুরু করেছেন। এ পর্যন্ত বিক্রি করেছেন ছয় লক্ষ ৭০ হাজার টাকার পেঁপে। আরও তিন থেকে চার লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।

ইসমাইল জানান, তিনি সবজি হিসেবে কাঁচা পেঁপে বিক্রি করেন না। ফল হিসেবে পাকা পেঁপে বিক্রি করেন। প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা দরে এখন বাগান থেকে কিনে নেন ব্যবসায়ীরা। শুরুতে ১১০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করেছিলেন।

ইসমাইলের বাবা মিলন মাঝি জানান, পেঁপে চাষ করতে বিশেষ কোনো পরিশ্রম করতে হয় না। পড়ালেখার পাশাপাশি এই কাজ করতে ইসমাইলের কোনো সমস্যা হয় না। বরং লেখাপড়াসহ সকল খরচ এখন ছেলে নিজেই চালাচ্ছে। মিলন মাঝি ছেলের এই সাফল্যে ভীষণ খুশি।

এদিকে ইসমাইলের পেঁপে বাগান দেখতে প্রতিনিয়ত লোকজন আসে। এলাকার শিক্ষিত তরুণ যুবকরা ইসমাইলের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেরাও পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। অনেকেই ইসমাইলের মাধ্যমে ঝালকাঠি, সাতক্ষীরাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে উন্নত মানের পেঁপে চারা আনছেন। ইসমাইল তাঁদের পরামর্শও দিচ্ছেন।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খায়রুল ইসলাম মল্লিক জানান, পেঁপে চাষ করে অভূতপূর্ব সাফল্য পাওয়ায় এলাকার শিক্ষিত যুবকদের কাছে ইসমাইল এখন তারুণ্যের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। তার সাফল্য দেখে এলাকার আরও অনেক যুবক পেঁপে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। তিনি আরও জানান, এক সময় জেলার বাইরে থেকে দ্বীপজেলা ভোলায় পেঁপেসহ অন্যান্য অনেক সবজি আমদানি করতে হতো। সম্প্রতি জেলার কৃষকরা আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর চাষাবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এখন ভোলা থেকে অনেক সবজি দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি হচ্ছে। যেকোনো ফসল চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকের পাশে থেকে সার্বিক সহায়তা করে আসছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।