মেয়েকে চাকরি দিতে সুপারের সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা, পরীক্ষার্থীদের ক্ষোভ
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পুনট দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার সুপার ছফির উদ্দিনের বিরুদ্ধে বড় মেয়েকে ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ দিতে ‘পাতানো’ পরীক্ষা আয়োজনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনাটি আড়াল করতে তিনি একই দিনে ছোট মেয়ের বিয়ের আয়োজনও করেন।
মাদ্রাসা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ আগে ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। শুক্রবার মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সুপারের বড় মেয়ে সোনিয়া আক্তার ওই পদে আবেদন করায় সুপার নিজে নিয়োগ বোর্ডে থাকতে পারেননি। তিনি সহ-সুপারকে বোর্ডের সদস্য সচিবের দায়িত্ব দেন।
মাদ্রাসার এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সুপার সাহেব গতকাল শুক্রবার তাঁর ছোট মেয়ের বিয়ের দাওয়াত দিয়েছিলেন। আমরা দাওয়াতে গিয়ে দেখি, মাদ্রাসায় ল্যাব সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা চলছে। পরে জানতে পারি, ওই পরীক্ষায় তাঁর বড় মেয়ে অংশ নিয়েছে।”
অভিযোগ রয়েছে, সুপার আগেই নিয়োগ বোর্ডের সদস্যদের মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেন, যাতে তাঁর মেয়েকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা যায়। একই দিনে তিনি বাড়িতে ছোট মেয়ে সিদ্দিকা খাতুনের বিয়ের আয়োজন করেন, যাতে নিয়োগ পরীক্ষাটি আড়ালে থাকে।
পরীক্ষায় মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শুকুর আলম মজুমদার ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পরীক্ষার শেষে সুপারের বড় মেয়েকেই উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।
এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, নিয়োগে স্বজনপ্রীতি ও অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে, ফলে যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন পরীক্ষার্থী বলেন, “এটা যে পাতানো পরীক্ষা, আগে জানলে অংশই নিতাম না। সুপারের মেয়েকে উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে। আমরা নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবি করছি।”
বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলে, সুপার ছফির উদ্দিন সাংবাদিক পরিচয় জানার পর ফোন কেটে দেন এবং পরবর্তী সময়ে ফোন ধরেননি।
মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “ফোনে নয়, সাক্ষাতে এসে কথা বলুন।”
এ বিষয়ে কালাই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাজী মনোয়ারুল হাসান বলেন, “সবকিছু নিয়ম মেনেই নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। সুপারের মেয়েই ওই পদে নির্বাচিত হয়েছেন। তবে একই দিনে তাঁর মেয়ের বিয়ের আয়োজন হয়েছে—এ তথ্য আমার জানা নেই।”




Comments