ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই দিনে নিহত ২, এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধকে কেন্দ্র করে রেস্তোরাঁয় গুলিবর্ষণের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতের নাম ইয়াসিন মিয়া (২০)। তিনি নবীনগর পৌর এলাকার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ও পেশায় হোটেল কর্মচারী ছিলেন।
রবিবার দিবাগত রাত পাঁচটার দিকে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইয়াসিন মারা যান। এর আগে শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান শিপন মিয়া (৩০), যিনি উপজেলার নূরজাহানপুর এলাকার কুখ্যাত মনেক ডাকাতের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাত ৯টার দিকে নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণিশাহ মাজার সংলগ্ন একটি রেস্তোরাঁয় শিপন মিয়া কয়েকজনের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী হঠাৎ রেস্তোরাঁয় ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়।
গুলিতে শিপন, হোটেল কর্মচারী ইয়াসিন (২০) ও নূর আলম (১৮) গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে হামলাকারীরা নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।
শিপনের মৃত্যুর খবর এলাকায় পৌঁছালে তার অনুসারীরা প্রতিপক্ষের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। তারা গণিশাহ মাজার সংলগ্ন তালতলায় স্থানীয় শিক্ষক এমরান হোসেন মাস্টারের অফিসে গুলি চালায়।
এমরান হোসেন (৩৮) গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেনের ছোট ভাই ও শ্যামগ্রাম মোহিনী কিশোর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক।
পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। শিপনের অনুসারীরা প্রতিপক্ষ থোল্লাকান্দি গ্রামের কয়েকটি বাড়িঘরেও ভাঙচুর চালায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক ও থানার ওসি মো. শাহিনুর ইসলাম নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ, র্যাব ও সেনা সদস্যরা রাতভর এলাকায় টহল দেয় যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পিয়াস বসাক বলেন, “বড়িকান্দি ইউনিয়নের গণিশাহ মাজার এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা ও গুলিবর্ষণে চারজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের সবাইকে রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়। এদের মধ্যে শিপন ও ইয়াসিন মারা গেছেন।”
নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম জানান, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাটি আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব বিরোধের জের ধরে ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।”




Comments