নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় বুড়িতিস্তা নদী খনন প্রকল্পকে কেন্দ্র করে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বসতভিটা ও ফসলি জমি রক্ষার দাবিতে এবং প্রকল্প বাতিলের লক্ষ্যে শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিশাল মশাল মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
উপজেলার কুটিরডাঙ্গা এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই মিছিলে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ পাঁচটি মৌজার প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার মানুষ অংশ নেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, নির্ধারিত নকশায় নদী খনন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নদীর তীরবর্তী বহু পরিবারের বসতবাড়ি, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, ঈদগাহ মাঠ ও আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাদের দাবি, এই এলাকার জমি অত্যন্ত উর্বর এবং এখানে বছরে তিনটি ফসল হয়। নদী খননের নামে এই জমি নষ্ট করা হলে হাজারো মানুষ
তাদের জীবিকা হারাবে।
স্থানীয় সংগঠন ‘জনগোষ্ঠী’র মুখপাত্র মো. আব্দুল আলিম ও যাদু মিয়া বলেন, ‘আমরা জমির বৈধ মালিক হওয়া সত্ত্বেও প্রকল্পের কোনো সিদ্ধান্তে আমাদের মতামত নেওয়া হয়নি। জোর করে এই প্রকল্প চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। স্থানীয়দের ক্ষতি হবে এমন কোনো প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন হতে দেব না।’
স্থানীয়রা জানান, নদী খনন নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সঙ্গে এলাকাবাসীর বিরোধ চলছে ২০০৯ সাল থেকে। তাদের অভিযোগ, পাউবো ইতোমধ্যে প্রায় সাড়ে সাতশ কৃষকের নামে ১১টি মিথ্যা মামলা দিয়েছে, যার ফলে অনেকে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। এর বিপরীতে কৃষকরাও খনন প্রকল্পের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, তারা নদী খননের বিপক্ষে নন, তবে বর্তমান প্রকল্প বাস্তবায়নের পদ্ধতিতে অনিয়ম রয়েছে। এছাড়া পাউবোর কিছু অসাধু কর্মকর্তা এলাকাবাসীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।
সার্বিক বিষয়ে ডোমার-ডিমলা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহদী বলেন, ‘জনগোষ্ঠী সংগঠনের লোকজন এলাকায় গুজব ও আতঙ্ক ছড়িয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে ব্রিজ এলাকায় পুলিশ ও আনসার ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া সেনাবাহিনীও নিয়মিত টহল দিচ্ছে এবং পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।’




Comments