সীতাকুণ্ডে অযত্ন-অবহেলায় বিলীন হওয়ার পথে ‘কুমিরা শহীদ স্মৃতি ৭১’
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ‘স্মৃতি ৭১’ শহীদ মিনার ও গণকবরগুলো অযত্ন আর অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। ১৯৭১ সালে কুমিরার সম্মুখ সমরের গৌরবময় বিজয় ও শহীদদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক সংলগ্ন ছোট কুমিরা এলাকায় নির্মিত হয়েছিল এই স্মৃতিস্তম্ভ। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে এটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
জানা যায়, ২০১১ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। পরে ২০১৬ সালের ২ এপ্রিল তৎকালীন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করেন। অভিযোগ রয়েছে, উদ্বোধনের পর থেকে দীর্ঘ সময়েও এর কোনো সংস্কার বা মেরাতম করা হয়নি। ফলে রোদ-বৃষ্টি, ধুলোবালি আর আগাছায় আচ্ছাদিত হয়ে এর পবিত্রতা ও সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের পর থেকেই এর আশপাশে প্রভাবশালীরা অবৈধভাবে দোকানপাট ও সেমিপাকা মার্কেট গড়ে তোলে। ২০১৪ সালের বিজয় দিবসের আগে উপজেলা প্রশাসন উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে কিছু স্থাপনা সরিয়ে দিলেও পুনরায় সেখানে দোকানপাট গড়ে ওঠে। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা নূর মিয়া ও আবুল কালাম জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ জানালে সম্প্রতি কিছু দোকান উচ্ছেদ করা হলেও বেদখল ও অবহেলার চিত্র খুব একটা পাল্টায়নি।
কুমিরার যুদ্ধে ১৯ জন সম্মুখ যোদ্ধাসহ মোট ১৬০ জন মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষ শহীদ হন। তাদের স্মরণে নির্মিত এই স্তম্ভের এমন দশায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধারা। তারা বলেন, “স্বাধীনতা যুদ্ধের স্মৃতি চোখের সামনে এভাবে নষ্ট হতে দেখে আমরা ব্যথিত। বিশেষ দিবসগুলোতে নামমাত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হলেও সারাবছর এটি অবহেলায় পড়ে থাকে।”
মুক্তিযোদ্ধা ও সচেতন মহলের দাবি, দ্রুত অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে স্মৃতিস্তম্ভটি সংস্কার এবং নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।




Comments