দেবিদ্বারে আগুনে পুড়ল মুয়াজ্জিন ও বিধবার ঘর, ক্ষতি ২০ লাখ টাকা
কুমিল্লার দেবিদ্বারে গভীর রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এক মুয়াজ্জিন ও এক বিধবা নারীর বসতঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে সৃষ্ট এই আগুনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তারা। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে উপজেলার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের মোল্লাবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ক্ষতিগ্রস্তরা দাবি করেছেন, আগুনে তাদের প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ভুক্তভোগীরা হলেন- ওই গ্রামের মৃত সামসুল হকের বিধবা মেয়ে মমতাজ বেগম এবং তার চাচাতো ভাই ও স্থানীয় মসজিদের মুয়াজ্জিন আবুল কালাম।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, অগ্নিকাণ্ডের সময় দুটি ঘরই তালাবদ্ধ ছিল এবং বাড়িতে কেউ ছিলেন না। বিধবা মমতাজ বেগম রাতে পাশের গ্রামে তার বোনের বাড়িতে ছিলেন। অন্যদিকে, মুয়াজ্জিন আবুল কালাম তার মেয়ের প্রসবব্যথা উঠায় তাকে নিয়ে পরিবারের সবাই উপজেলা সদরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অবস্থান করছিলেন।
স্থানীয়দের ধারণা, মমতাজের বন্ধ ঘর থেকেই বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই সেই আগুন পাশের আবুল কালামের বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু পানির অভাব ও আগুনের তীব্রতার কারণে ঘরের কোনো আসবাবপত্র বা মালামাল রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। ফায়ার সার্ভিস পৌঁছানোর আগেই ঘর দুটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
সর্বস্ব হারিয়ে দিশেহারা মুয়াজ্জিন আবুল কালাম বলেন, ‘‘মেয়ের সিজারিয়ান অপারেশনের কারণে আমরা হাসপাতালে ছিলাম। আগুনে আমার ঘরের আসবাবপত্র, জরুরি দলিলপত্র ও নগদ এক লাখের বেশি টাকা পুড়ে গেছে। মসজিদের বেতনের জমানো ৫০ হাজার এবং গাছ বিক্রির ৫০ হাজার টাকা ঘরে ছিল। তাড়াহুড়ো করে হাসপাতালে যাওয়ার সময় টাকার কথা মনে ছিল না। এখন আমি পথে বসে গেলাম।’’
স্থানীয় বাসিন্দা মাসুম ফকির বলেন, ‘‘প্রথমে শব্দ শুনে চুরির ঘটনা ভেবেছিলাম। পরে আগুন দেখে সবাই মিলে নেভানোর চেষ্টা করি। কিন্তু রাত গভীর হওয়ায় এবং পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।’’
এ বিষয়ে দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাকিবুল ইসলাম বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে লোক মারফত ক্ষতিগ্রস্তদের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবার দুটিকে যথাসাধ্য সহযোগিতা করা হবে।’’




Comments