ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের বাস্তবায়নে নেত্রকোনা জেলায় মন্দিরভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের ষষ্ঠ পর্যায় সফলভাবে এগিয়ে চলছে। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে এই কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বর্তমানে জেলাজুড়ে মোট ১২৯টি শিক্ষা কেন্দ্র চালু রয়েছে।
জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলমান এই ১২৯টি কেন্দ্রের মধ্যে প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় ৮৭টি, শিশু গীতা শিক্ষা কেন্দ্র ১৮টি এবং বয়স্ক গীতা শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে ২৪টি।
কার্যক্রমের অগ্রগতির বিষয়ে সহকারী প্রকল্প পরিচালক এ কে এম হাসান উজ জামান জানান, আগামী অর্থবছরে কেন্দ্রের সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। তবে জনবল সংকট বর্তমানে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, ‘কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ আমাদের মোট জনবল মাত্র ৭ জন। স্বল্প এই জনবল দিয়ে পুরো জেলার কার্যক্রম তদারকি করা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে।’
একই সমস্যার কথা তুলে ধরেন ফিল্ড সুপারভাইজার শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমরা মাত্র দু’জন কর্মী দিয়ে জেলার ১০টি উপজেলার কেন্দ্রগুলো নিয়মিত মনিটরিং করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি। অতিরিক্ত জনবল না থাকায় কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় বেগ পেতে হচ্ছে।’
সরেজমিনে খালিয়াজুরী উপজেলার বানিয়াহাটি স্কুল পরিদর্শনকালে দেখা যায়, সেখানে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে পাঠদান চলছে। স্কুল কমিটির সভাপতি জানান, ‘ছোট ছোট শিশুরা আগ্রহ নিয়ে নিয়মিত ক্লাস করছে এবং মনিটরিং ব্যবস্থাও জোরদার রয়েছে। আমাদের এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকসংখ্যা বেশি হওয়ায় আরও কয়েকটি স্কুলের চাহিদা রয়েছে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নতুন স্কুলের জন্য সুপারিশ করেছি।’
সার্বিক বিষয়ে নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক এই কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী শিশু ও বয়স্কদের জন্য মন্দিরভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম শুধু একটি প্রকল্প নয়, এটি আলোর পথে এগিয়ে যাওয়ার এক আশার নাম। এই উদ্যোগ তাদের হাতে কলম তুলে দিয়ে আত্মবিশ্বাস জাগাচ্ছে। সরকার যে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এই কার্যক্রম চালু করেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী।’




Comments