Image description

গোপালগঞ্জে নিয়মিত চেকপোস্টে তল্লাশির সময় একটি প্রাইভেটকার থেকে নগদ ১০ লাখ টাকাসহ শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের পিয়ন মোশারফ হোসেন এবং গাড়ির চালক মো. মনির হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় প্রাইভেটকারটি জব্দ করা হয়। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গোপালগঞ্জ সড়ক বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে গোপালগঞ্জ শহরের পুলিশ লাইনস মোড়ে নিয়মিত তল্লাশি চলাকালে প্রাইভেটকারটি থামিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ। গাড়ির ভেতরে একটি ব্যাগ থেকে নগদ ১০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশের বিবৃতি অনুযায়ী, জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ির আরোহী ও শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের পিয়ন মোশারফ হোসেন টাকার উৎস নিয়ে অসংলগ্ন ও সন্দেহজনক বক্তব্য দেন। এতে সন্দেহ হলে পুলিশ প্রাইভেটকারসহ টাকা জব্দ করে এবং মোশারফ হোসেন ও চালককে আটক করে গোপালগঞ্জ সদর থানায় নিয়ে যায়।

আটক মোশারফ হোসেনের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলার চর খসরু গ্রামে। চালক মো. মনির হোসেন (৪০) শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা।

সড়ক বিভাগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, শরীয়তপুর সড়ক বিভাগের একটি কাজের দরপত্র অনুমোদনের জন্য এই টাকা গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল ও জোন কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দেওয়ার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল। উদ্ধারকৃত টাকার খামের ওপর ‘সার্কেল’ লেখা ছিল এবং গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর দপ্তরের নাম উল্লেখ ছিল।

তবে আটক মোশারফ হোসেন পুলিশকে জানান, তিনি এই টাকা গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নিয়ে এসেছিলেন।

সড়ক বিভাগের একাধিক সূত্রের অভিযোগ, এ ঘটনার দায় এড়াতে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সাদেকুল ইসলাম ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম কৌশলে উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জিকরুল ইসলাম বলেন, “শরীয়তপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোবাইলে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কিন্তু এটি আমার বিষয় নয়। দীর্ঘ ৩০ বছরের চাকরিতে আমি কখনো ফিল্ডে কাজ করিনি। এই সরকারের আমলে গোপালগঞ্জে বদলি হয়ে প্রথম ফিল্ডে কাজ করছি। আমি কোনো টেন্ডার বা ঠিকাদারি বিল প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত নই। বর্তমান নিয়মে নির্বাহী প্রকৌশলী নিজ দপ্তর থেকেই টেন্ডার সম্পন্ন করেন।”

গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মোহাম্মদ আফতাব উদ্দিন বলেন, “পুলিশ লাইনস মোড় থেকে ১০ লাখ টাকাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেলের উপসহকারী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং আইনি প্রক্রিয়া চলমান।”

উল্লেখ্য, শরীয়তপুর সড়ক বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে গোপালগঞ্জ সড়ক সার্কেল ও জোনের আওতায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে আসছে।