Image description

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ট্রাফিক পুলিশের ভয়ে পালানোর সময় চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মোটরসাইকেল আরোহী দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে জেলা শহরের সার্কিট হাউস মোড় এলাকায় সোনামসজিদ মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ জনতা চাঁপাইনবাবগঞ্জ–সোনামসজিদ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে, ফলে দীর্ঘ ৪ ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। এসময় ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও ফাঁড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়।

নিহতরা হলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার জোড়বাগান মহল্লার আশরাফুল ইসলামের ছেলে সোহাগ আহমেদ (১৮) ও আজাইপুর পোলাডাঙ্গা মহল্লার শাহ আলমের ছেলে রিফাত আলী (১৮)। তারা সম্পর্কে মামাতো-ফুফাতো ভাই। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেলে সার্কিট হাউস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই করছিল। এসময় মোটরসাইকেলে থাকা সোহাগ ও রিফাতকে থামার সংকেত দেয়া হলে তারা তা অমান্য করে দ্রুতগতিতে পালানোর চেষ্টা করে। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কে উঠে গেলে সোনামসজিদ থেকে আসা একটি চলন্ত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তারা। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন রিফাত। পরে গুরুতর আহত সোহাগকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।

তবে পরিবার ও এলাকাবাসীর দাবি, বিকেলে রিফাত ও সোহাগ মোটরসাইকেলযোগে সার্কিট হাউসের দিক থেকে আসছিল। এসময় পুলিশের ধাক্কায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহসড়কে উঠতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলে তারা নিহত হয়।

ধাক্কা দেয়ার বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, সার্কিট হাউস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ তদের ধাক্কা দেয়নি। সেখানকার সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখলে স্পষ্ট বুঝতে পারবেন।

এদিকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, পুলিশের ভয়ে দ্রুত পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সরাসরি মহাসড়কে উঠে দুর্ঘটনার শিকার হন রিফাত ও সোহাগ।

এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে নিহত রিফাতের লাশ নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ জনতা। বিশ্বরোড মোড়ে সার্জেন্ট আতাউল ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও আসবাবপত্রে আগুন দেয়া হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গেলে উত্তেজিত জনতা ধাওয়া দেয়। পরে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। লাশ উদ্ধারের পর জেলা হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।