ক্ষেতলাল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় থেকে অফিস সহায়কের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলা পরিষদ চত্বরে অবস্থিত সমাজসেবা কার্যালয়ের একটি কক্ষ থেকে মাহবুব আলম জনি (৩৫) নামে এক অফিস সহায়কের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে এই ঘটনাটি জানাজানি হয়।
নিহত মাহবুব আলম জনি বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বটিয়াভাঙ্গা গ্রামের খায়রুল ইসলামের ছেলে। তিনি ২০১৮ সাল থেকে ক্ষেতলাল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ওই অফিসে নৈশপ্রহরীর পদ শূন্য থাকায় জনি নিয়মিতভাবে অফিস কক্ষেই রাত্রিযাপন করতেন। গত বৃহস্পতিবার অফিস শেষে সহকর্মীরা চলে গেলেও জনি অফিসেই অবস্থান করছিলেন। শনিবার সকালে রাষ্ট্রীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জনির মুঠোফোনে একাধিকবার কল করেন। দীর্ঘক্ষণ ফোন করেও কোনো সাড়া না পাওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়।
পরবর্তীতে সকাল ৯টার দিকে অফিসের পরিচ্ছন্নতা কর্মী জোবেদা খাতুনকে জনির খোঁজ নিতে পাঠানো হয়। তিনি কার্যালয়ে গিয়ে ভেতর থেকে তালাবদ্ধ একটি কক্ষের জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে জনির ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান। তাঁর চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হয় এবং দ্রুত পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
সংবাদ পেয়ে ক্ষেতলাল থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করেন। সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত শেষে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, কার্যালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলেও ঘটনার সময় সবগুলো ক্যামেরা অকেজো ছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, “শনিবার শোক দিবসের পতাকা অর্ধনমিত করার বিষয়ে জনিকে একাধিকবার ফোন দিয়েও পাইনি। পরে পরিচ্ছন্নতা কর্মীকে পাঠালে সে গিয়ে ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক।”
ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, “খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর এটি আত্মহত্যা নাকি অন্য কিছু, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”




Comments