বড়দিনের উৎসবে সেজেছে কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টান পল্লী
আসন্ন শুভ বড়দিনকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজে মেতেছে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই উপজেলার চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টান পল্লী। পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এই জনপদে এখন সাজ সাজ রব। বর্ণিল আলোকসজ্জা আর উৎসবমুখর পরিবেশে চারদিকে বইছে আনন্দের হাওয়া।
ঐতিহ্যবাহী স্বাস্থ্যসেবার কেন্দ্রবিন্দু ও ‘বাতিঘর’ হিসেবে পরিচিত চন্দ্রঘোনা খ্রীষ্টিয়ান হাসপাতাল সংলগ্ন এই পল্লীটি এখন স্থানীয়দের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। গত সোমবার সন্ধ্যায় সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো হাসপাতাল প্রাঙ্গণকে বর্ণিল আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। বিভিন্ন রঙের আলোকছটায় পুরো এলাকা এক অপরূপ রূপ ধারণ করেছে।
উৎসবের প্রস্তুতি সম্পর্কে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘ ও কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পালক প্রধান রেভা. রোনাল্ড দিলীপ সরকার বলেন, “গত ২০ ডিসেম্বর ‘চাইল্ড ক্রিসমাস’ বা শিশুদের বড়দিনের মাধ্যমে আমাদের উৎসব শুরু হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় ২৫ ডিসেম্বর বড়দিনের মূল অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। বড়দিন মানুষকে মানবিকতা, সহমর্মিতা ও শান্তির শিক্ষা দেয়। এই উপলক্ষে আমরা দেশবাসীসহ সকল খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই।”
চট্টগ্রাম এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের সভাপতি বিপ্লব মারমা জানান, প্রতিবারের ন্যায় এবারও বড়দিনের আনন্দ সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানান।
শুধু গির্জা বা হাসপাতাল নয়, খ্রিষ্টান পল্লীর প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে চলছে সাজসজ্জার কাজ। প্রতিটি আঙিনায় তৈরি করা হচ্ছে যিশুর জন্মস্মারক ঐতিহ্যবাহী ‘গোশালা’। বসানো হয়েছে রঙিন ক্রিসমাস ট্রি এবং ঘরগুলো আলোকিত করা হয়েছে তারার আলোয়।
বিবিসিএস কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিলর ভিএল পাংখোয়া বলেন, “বড়দিনকে ঘিরে ইতিমধ্যে বিলাইছড়ি পাংখোয়া পাড়া ও কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা মিশন এলাকাজুড়ে বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। ২৫ ডিসেম্বর মূল দিনে জমকালো আয়োজনে উৎসব পালন করা হবে।”
আগামী ২৫ ডিসেম্বর সকালে চন্দ্রঘোনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চ সংঘের আয়োজনে মিশন হাসপাতাল সংলগ্ন চার্চে বিশেষ সমবেত প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া দিনব্যাপী আয়োজনে থাকছে খ্রিষ্ট সংগীত পরিবেশন, কেক কাটার উৎসব, শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রীতিভোজ। এর আগে গত ২০ ডিসেম্বর হাসপাতালের পক্ষ থেকে 'প্রাক-বড়দিন উপহার বিনিময়' অনুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
শান্তি আর সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে পাহাড়ের এই জনপদে বড়দিনের এই আয়োজন এখন যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।




Comments