হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার দাপটে স্থবির হয়ে পড়েছে উত্তরের জনপদ সৈয়দপুর। গত কয়েক দিন ধরে শীতের তীব্রতা এত বেড়েছে যে, রাত থেকে সকাল ১০-১১টা পর্যন্ত হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় কাঁপছে এই জনপদ। ব্যাহত হচ্ছে সাধারণ জীবনযাত্রা। ঘন কুয়াশা এবং হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শ্রমজীবী ও কৃষকরা।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় সৈয়দপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ভোর থেকে সকাল ৭-৮টা পর্যন্ত বৃষ্টির ফোঁটার মতো ঝরছে কুয়াশা। গত তিন দিন থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের। গভীর রাত থেকে কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সারা সৈয়দপুর উপজেলা। এ কারণে সকাল ৮টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে বিভিন্ন যানবাহন। এ সময় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বিমান ওঠা নামায় বিঘœ ঘটছে।
সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন। শীতের এই প্রভাব আরও কয়েক দিন থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে প্রচন্ড শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। কাজে বের হতে না পারায় তাদের রোজগার বন্ধ হওয়ার উপক্রম। গ্রামের মানুষ খড় কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তীব্র শীত উপেক্ষা করে মাত্র ২৫ শতাংশ মানুষ কাজের সন্ধানে ছুটলেও শহরে গরম কাপড়ের দোকানপাট ছাড়া অন্যান্য এলাকায় সমাগম কম।
কাউসার নামের এক অটোরিকশা চালক জানান, ২-৩ দিন ধরে ঠান্ডা এত বেশি যে, কুয়াশায় রাস্তা দেখা যায় না, তবুও পেটের দায়ে কাজ করতে বের হয়েছেন।
শহরের হাতিখানা এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বলেন, গত তিন দিন ধরে শীতের তীব্রতা বেশি। মানুষের কষ্ট হচ্ছে। লোকজন বেলা করে কাজে বের হচ্ছে। আজতো (মঙ্গলবার) ঠান্ডায় দুপুরেও পা থেকে মোজা খুলতে পারতেছি না।
গোলাহাট পৌর এলাকার জাভেদ বলেন, কাজ করতে যাচ্ছি। সারারাত থাকে কনকনে ঠান্ডা, দিনের বেলায়ও একই অবস্থা। এমন অবস্থায় আমার মতো খেটে খাওয়া মানুষের কষ্টের শেষ নাই। কাজ না করে ঘরে বসে থাকলে পেটে ভাত জুটবে না। সংসার তো চালা লাগবে। তাই বের হয়েছি।
ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডায় ধানের বীজতলা ও আলুক্ষেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অন্যদিকে ঠান্ডা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের হারও বেড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বঃয়স্করা বেশি আক্রান্ত হওয়ায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে।
শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ওয়সিম বারি জয় এই আবহাওয়ায় শিশু ও বয়স্কদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হতে এবং সকলকে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন
এদিকে হঠাৎ শীত বেড়ে যাওয়ায় রেললাইনের ধারে ও ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। কিছুটা কম দামে শীতের কাপড় কিনে ঠান্ডা নিবারণের আশায় ক্রেতারা এসব দোকানে ভিড় করছেন।




Comments