কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। গত তিন দিন ধরে এই জনপদে সূর্যের দেখা মেলেনি। ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বাড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে এবং শীতের এই তীব্রতা অব্যাহত থাকার আশঙ্কা রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সন্ধ্যা থেকে পরদিন দুপুর পর্যন্ত গোটা উপজেলা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে। কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। কনকনে শীতের হাত থেকে বাঁচতে সামর্থ্যহীন মানুষগুলো ভিড় জমাচ্ছেন ফুটপাতের পুরোনো কাপড়ের দোকানগুলোতে। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। তীব্র শীতের কারণে অনেকেই সময়মতো কাজে বের হতে না পারায় তাদের দৈনন্দিন আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
স্থানীয় অটোরিকশা চালক আবু তালেব বলেন, "কুয়াশার কারণে সকালে হেডলাইট জ্বালিয়েও রাস্তা দেখা যায় না। যাত্রীও অনেক কমে গেছে। আয় কমে যাওয়ায় পরিবারের খরচ মেটাতে হিমশিম খাচ্ছি।"
সরকারি ও বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু হলেও তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার দত্ত জানান, ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয় থেকে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কম্বল কিনে ১০টি ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া জেলা থেকে প্রাপ্ত ৬০০ কম্বলের মধ্যে ৫০০টি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ঘন কুয়াশা ও হিমেল বাতাসের কারণে শীতের অনুভূতি বেশি হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কিছুটা হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্মল আকাশের দেখা না পাওয়া পর্যন্ত শীতের এই দাপট কমার সম্ভাবনা ক্ষীণ।




Comments