পটুয়াখালীতে স্বপ্নের ইপিজেড নির্মান প্রকল্পের কাজ চলছে দ্রুতবেগে
দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা সচল করতে পটুয়াখালীতে নির্মাণাধীন স্বপ্নের ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আগামী বছরের শুরুর দিকে ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বা ভূমি উন্নয়নের কাজ শেষ হবে এবং জুলাই মাসের মধ্যে বিনিয়োগকারীদের মাঝে প্লট বরাদ্দ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকল্পটিকে ঘিরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পটুয়াখালী সদর উপজেলার আউলিযাপুর ইউনিয়নের পচাঁকোরালিয়া গ্রামে ৪১০.৭৮ একর জমির ওপর চলছে বিশাল এই কর্মযজ্ঞ। ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যয়ের মধ্যে ১ হাজার ১০৫ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এবং ৩৩৮ কোটি টাকা বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) অর্থায়ন করছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, বালু ভরাটের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। বর্তমানে ৩.১৫ লক্ষ মিটার রাস্তা, ৩০ হাজার মিটার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, চারটি ছয়তলা কারখানা ভবন, তিনটি দশতলা অফিস ভবন এবং চারটি ছয়তলা ও তিনটি দশতলা আবাসিক ভবন নির্মাণের কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া জোন অফিস, কাস্টমস অফিস, নিরাপত্তা ভবন এবং একটি হেলিপ্যাড নির্মাণ করা হচ্ছে। একই প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের জন্য পুকুর, মসজিদ ও বিদ্যালয়সহ আধুনিক সুবিধা সম্বলিত ১৫৪টি পুনর্বাসন ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সাবস্টেশন ও ১৫ কিলোমিটার হাই-টেনশন লাইন নির্মাণের কাজও সমানতালে চলছে। পটুয়াখালী ইপিজেডে মোট ৩০৬টি শিল্প প্লট থাকবে। এছাড়া পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় ২.২৫ একর জমিতে বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি আধুনিক ক্লাব স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ২ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ইপিজেডকে ঘিরে এলাকায় চাকরি, ঘরভাড়া ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটবে, যা এই অঞ্চলের জীবনমান আমূল বদলে দেবে।
বেপজা ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে সকল নির্মাণ কাজ শেষ করে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে পুরোদমে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে। এটি দক্ষিণাঞ্চলের শিল্পায়নে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।




Comments