উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় শীতের তীব্রতা চরম আকার ধারণ করেছে। পৌষের শুরুতেই গত পাঁচ দিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় জনজীবন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। হাড়কাঁপানো এই শীতে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছেন শিশু ও বয়স্করা।
গত বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালেও সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ডিমলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর জানান, মঙ্গলবার সকালে ডিমলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা আরও কমার পূর্বাভাস রয়েছে।
টানা শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। কুয়াশা ও কনকনে ঠান্ডার কারণে তারা ঠিকমতো কাজে যেতে পারছেন না। অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। সরেজমিনে দেখা যায়, জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ গরম কাপড় জড়িয়ে বের হলেও যাত্রী না থাকায় অলস সময় পার করছেন ভ্যান ও অটোরিকশা চালকরা। দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে যানবাহন চলাচল করছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
শীতের প্রভাব পড়েছে কৃষিতেও। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মীর হাসান আল বান্না জানান, মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা এবং সরিষা, ভুট্টা, পেঁয়াজ ও রসুনের মতো রবি শস্যের পরিচর্যা ব্যাহত হচ্ছে। এতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইমরানুজ্জামান বলেন, ‘সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ১ হাজার ৬০০ কম্বল ইতোমধ্যে ১০টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। তবে চাহিদার তুলনায় তা অপ্রতুল। নতুন করে আরও কম্বল চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।’ তিনি শীতার্তদের সহায়তায় সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
মানবকণ্ঠ/ডিআর




Comments