
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে শিকল পরিয়ে স্ত্রীকে বাড়ির পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখার একটি একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তে তা ভাইরাল হয়। ঘটনাটি ঘটেছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাটিকামারি ইউনিয়নের আলীপুর গ্রামে। গৃহবধূর দাবি, তার স্বামী অন্য মেয়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আর স্বামীর দাবি, তার স্ত্রী পরকীয় করেন এবং টাকা নিয়ে পালিয়েছেন।
শিকলবন্দি ওই গৃহবধূর নাম নাসরিন বেগম (২৪)। নাসরিন ওই গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী। তিনি একই ইউনিয়নের বাহারা গ্রামের ওসমান শেখের মেয়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গৃহবধূ নাসরিনের কোমরে শিকল পরানো। শিকলের অপর প্রান্ত পিলারের সঙ্গে তালা দিয়ে আটকানো। একটি বেঞ্চে বসে আছেন গৃহবধূ নাসরিন। তার পাশে বসে আছেন স্বামী আব্দুর রহমান, তার কাছে বড় ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। সামনে অন্য একটি মেয়ের কোলে তাদের ছোট ছেলে। চারপাশে উৎসুক জনতার ভিড়।
নাসরিন বেগমের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৩ সালে সামাজিকভাবে আব্দুর রহমানের সঙ্গে নাসরিনের বিয়ে হয়। এই দম্পতির ৩ সন্তান রয়েছে। কয়েক মাস আগে আব্দুর রহমান অন্য মেয়েদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলে তা তার স্ত্রী জানতে পারেন। এরপর নাসরিন বেগম টিকটক আইডি খোলেন। এ নিয়ে মাঝেমধ্যে তার স্বামী নাসরিনকে গালাগাল ও মারধর করেন। ২৫ শে ফেব্রুয়ারি বেধড়ক মারধর করলে স্বামীর সংসার করবেন না বলে জানান নাসরিন। ওইদিন তিনি বাড়ি থেকে বের যান এবং ওঠেন বোনের বাসায়। পরে সেখান থেকে খুলনায় চলে যান। গতকাল (শনিবার) নাসরিনের ভাই মিটল শেখকে দিয়ে খুলনা থেকে স্ত্রীকে বাগিতে নিয়ে আসেন এবং কোমরে শিকল পরিয়ে ঘরের পিলারের সঙ্গে বেঁধে রাখেন আব্দুর রহমান।
নাসরিনের বোন আসমা বেগম বলেন, ‘গতকাল নাসরিনকে শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছিল। রাতে তার শিকল খুলে দেওয়া হয়। এর আগেও কয়েকবার আমার বোনকে মারধর করা হয়। আজ বিকেলে পরিবারের লোকদের নিয়ে বসার কথা রয়েছে। প্রয়োজন হলে মামলা করব।’
আব্দুর রহমান বলেন, ‘নাসরিন অন্য ছেলেদের সঙ্গে পরকীয়া করে। ২৫ ফেব্রুয়ারি বাড়ি থেকে যাওয়ার সময় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। নাসরিনের নামে ব্যাংকে আরও টাকা রয়েছে। এসব টাকা উত্তোলন করতে হবে। এমন কথা বলে তার ভাইকে দিয়ে খুলনা থেকে এনে শিকলবন্দি করে রেখেছিলাম। রাতে খুলে দিয়েছিলাম।’
Comments