তামাক মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য গভীর ও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) সাম্প্রতিক একটি তথ্যপত্রে তামাক ব্যবহার ও মানসিক অসুস্থতার মধ্যকার জটিল সম্পর্কের বিষয়টি উঠে এসেছে।

তথ্যপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজনই ধূমপায়ী। এই অভ্যাস তাদের স্বাস্থ্যঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানসিক অসুস্থতায় ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ধূমপানের হার কমানো গেলে তাদের আয়ুষ্কাল ও জীবনযাত্রার মান উন্নত করা সম্ভব।

প্রতিবেদনে মানসিক অসুস্থতা ও তামাক ব্যবহারের মধ্যে বিদ্যমান দ্বিমুখী সম্পর্কের কথাও বলা হয়েছে। একদিকে মানসিক অসুস্থতা একজন ব্যক্তিকে তামাক ব্যবহারে প্ররোচিত করে, অন্যদিকে তামাক সেবন নিজেই মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তোলে।

তথ্যপত্রে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে বলা হয়েছে, গুরুতর মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা সাধারণ মানুষের তুলনায় গড়ে ১৫-২০ বছর আগেই মারা যান। তাদের এই অকালমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ তামাক ব্যবহার।

তামাকের প্রভাব শুধু মৃত্যুহারেই সীমাবদ্ধ নয়, এটি জীবনের মান ও মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াইয়ের সক্ষমতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। উদাহরণস্বরূপ, তামাক কিছু মানসিক রোগের ওষুধের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। বিপরীতে, তামাক ছাড়লে কিছু অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধের মাত্রা সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমানো সম্ভব হয়।

তথ্যপত্রটি ভুল ধারণা দূর করতে তথ্যনির্ভর উপস্থাপনায় সাজানো হয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণার পরিসংখ্যান এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে জোর দেওয়া হয়েছে, মানসিক অসুস্থ ব্যক্তিদের তামাক ছাড়তে সহায়তা করা জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

এতে শুধু শারীরিক স্বাস্থ্যের উন্নতি নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেরও বহুবিধ উপকার হয়। বিষণ্ণতা, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ কমে গিয়ে মেজাজ উন্নত হয়। এমনকি অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার-এর উপসর্গও হ্রাস পায়।