Image description

যুক্তরাজ্যে সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে বড় ধরনের পরিবর্তনের মুখে পড়তে যাচ্ছে গুগল। দেশটির প্রতিযোগিতা নিয়ন্ত্রক সংস্থা কম্পিটিশন অ্যান্ড মার্কেটস অথরিটি (সিএমএ) গুগলের সার্চ সেবায় হস্তক্ষেপ করে ব্যবহারকারীদের আরও বিকল্প সুবিধা দিতে পারবে।

সিএমএ জানায়, যুক্তরাজ্যে অনলাইন সার্চের বাজারে গুগলের প্রভাব “অস্বীকার করার উপায় নেই।” প্রতিষ্ঠানটির ডিজিটাল মার্কেটস বিভাগের প্রধান উইল হেইটার বলেন, “আমরা দেখেছি, যুক্তরাজ্যে সার্চ ও সার্চ বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে গুগলের আধিপত্য সুস্পষ্ট। দেশে ৯০ শতাংশের বেশি সার্চ গুগলের মাধ্যমেই হয়।”

সিএমএ আরো জানিয়েছে, ২০২৫ সালের শেষ দিকে তারা একটি জনপরামর্শ প্রক্রিয়া শুরু করবে। যাতে গুগলের সার্চ ব্যবস্থায় কী ধরনের পরিবর্তন আনা যায় তা নির্ধারণ করা হয়।

সিএমএ আগে থেকেই গুগলের বিরুদ্ধে কিছু সম্ভাব্য পদক্ষেপের ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-

চয়েস স্ক্রিন: ব্যবহারকারীরা নতুন ডিভাইস বা ব্রাউজারে সার্চ ইঞ্জিন বেছে নিতে পারবেন। শুধু গুগল নয়, অন্য সার্চ ইঞ্জিনও থাকবে বিকল্প হিসেবে।

প্রকাশকদের নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি: সংবাদমাধ্যম বা ওয়েবসাইটগুলো তাদের কনটেন্ট কীভাবে সার্চে প্রদর্শিত হবে, তা নিয়ে আরও স্বাধীনতা পাবে।

ন্যায্য র‌্যাঙ্কিং নীতি: সার্চ ফলাফলে কোন ওয়েবসাইট আগে দেখানো হবে। তা নির্ধারণে স্বচ্ছ ও ন্যায্য নীতি তৈরি করা হবে।

অভিযোগ ব্যবস্থাপনা: সার্চে অন্যায্য আচরণের অভিযোগ থাকলে ব্যবহারকারীরা সরাসরি অভিযোগ করতে পারবে।

গুগল বলেছে, এই সিদ্ধান্ত উদ্ভাবন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিযোগিতা বিভাগের প্রধান অলিভার বেটহেল এক ব্লগ পোস্টে লিখেছেন, “যুক্তরাজ্যের ব্যবসা ও গ্রাহকরা গুগলের উদ্ভাবনের প্রথম উপকারভোগী। শুধু ২০২৩ সালেই গুগল সার্চ যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে ১১৮ বিলিয়ন পাউন্ড অবদান রেখেছে। এখন যেসব পরিবর্তনের প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে, তা উদ্ভাবনের গতি কমিয়ে দিতে পারে।”

ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সংগঠন উইচ–এর নীতি পরিচালক রোচিও কনচা বলেন, “এই পদক্ষেপটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সার্চ প্রযুক্তিতে গুগলের একচ্ছত্র আধিপত্যের ফলে ভোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এখন সিএমএ–এর উচিত কার্যকরভাবে ব্যবস্থা নেওয়া।”

এদিকে গুগল শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও নিয়মকানুনের চাপে পড়ছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের আদালত গুগল প্লে স্টোর–এর নীতিমালা পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিজ্ঞাপন প্রযুক্তি খাতে বাজার ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে কোম্পানিটিকে ২.৯৫ বিলিয়ন ইউরো জরিমানা করেছে।