Image description

‘জাতীয় নিরাপত্তা’র কারণ দেখিয়ে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) যাওয়ার আসন্ন মিশন থেকে এক রুশ নভোচারীকে বাদ দিয়েছে ইলন মাস্কের মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্স। ওই নভোচারীর নাম ওলেগ আরতেমিয়েভ। 

স্পেসএক্সের রকেট ইঞ্জিন ও গোপন নথির ছবি তোলার অভিযোগ ওঠার পর তাকে মিশন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম।

রুশ অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইনসাইডার’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫৪ বছর বয়সী আরতেমিয়েভ আগামী ফেব্রুয়ারিতে চার সদস্যের ক্রু দলের অংশ হিসেবে মহাকাশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার বিরুদ্ধে স্পেসএক্সের প্রযুক্তির গোপন ছবি তোলার অভিযোগ ওঠায় শেষ মুহূর্তে তাকে বাদ দেওয়া হয়।

আরতেমিয়েভ একজন অত্যন্ত অভিজ্ঞ নভোচারী। এর আগে তিনি তিনবার মহাকাশে গিয়েছেন এবং মোট ৫৬০ দিন সেখানে কাটিয়েছেন। মহাকাশ শিল্প বিশ্লেষক জর্জি ত্রিশকিন এই সিদ্ধান্তকে অস্বাভাবিক আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এত অভিজ্ঞ একজন নভোচারীর কাছ থেকে এমন ভুল হওয়া কল্পনা করাও কঠিন।’

স্পেসএক্স বা নাসা এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য না করলেও, রুশ মহাকাশ সংস্থা ‘রসকসমস’ ভিন্ন ব্যাখ্যা দিয়েছে। টেলিগ্রামে এক বিবৃতিতে তারা জানায়, অন্য দায়িত্ব দেওয়ায় আরতেমিয়েভকে ক্রু তালিকা থেকে সরানো হয়েছে। তাকে ‘রাশিয়ার নায়ক’ হিসেবেও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি।

আরতেমিয়েভের পরিবর্তে আসন্ন ‘ক্রু-১২’ মিশনে আন্দ্রেই ফেদ্যায়েভকে যুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে মিশনটি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা রয়েছে এবং নভোচারীরা আইএসএস-এ ছয় মাস অবস্থান করবেন।

নভোচারী বাতিলের ঘটনার পাশাপাশি রাশিয়ার মহাকাশ কর্মসূচিতেও নতুন অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। গত সপ্তাহে ‘সয়ুজ এমএস-২৮’ রকেট উৎক্ষেপণের তীব্র কম্পনে কাজাখস্তানের বাইকোনুর কসমোড্রোমের একমাত্র সক্রিয় মানববাহী লঞ্চপ্যাডটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

রসকসমস জানিয়েছে, লঞ্চপ্যাড মেরামত না হওয়া পর্যন্ত তারা নতুন কোনো রকেট উৎক্ষেপণ করতে পারবে না। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, ১৯৬১ সালের পর এই প্রথম রাশিয়া সাময়িকভাবে মানববাহী মহাকাশ মিশন পাঠানোর সক্ষমতা হারাল।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আরতেমিয়েভকে বাতিলের ঘটনা এবং লঞ্চপ্যাড সংকট সব মিলিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার দীর্ঘদিনের মহাকাশ সহযোগিতায় নতুন করে ফাটল ধরতে পারে।

সূত্র: দ্য মস্কো টাইমস