Image description

মৌসুমি বায়ু বিদায়ের সময় ঘনিয়ে এলেও সারাদেশে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকায় থেমে থেমে বৃষ্টিপাত হয়, যা ছুটির দিনে নগরবাসীকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের হতে নিরুৎসাহিত করে। তবে এই বৃষ্টিতে ৪৯তম বিসিএস পরীক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষ ও পথচারীরা চরম বিপাকে পড়েন। হঠাৎ বৃষ্টি ও যানজট মিলে নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আগামী ৫ দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির প্রবণতা থাকতে পারে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রাজধানীসহ দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের দুয়েক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, মেঘের একটি ভারী সেল আছে। এটি শেষ হলেও, আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আগামী চার-পাঁচ দিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে। শুক্রবার রাজধানীতে ৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা নিয়ম অনুযায়ী ‘ভারী বৃষ্টি’ হিসেবে গণ্য। একই দিনে কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ ও নওগাঁয় বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর ধারণা দিয়েছে যে মৌসুমি বায়ু চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বায়ু বিদায়ের আগে এমন অস্থায়ী বৃষ্টিপাত স্বাভাবিক। তাদের মতে, ২০ অক্টোবরের পর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে তা নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।

শুক্রবার বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহান পরীক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা। রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রে ৪৯তম বিশেষ বিসিএস (শিক্ষা) প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয়। পরীক্ষা শেষে অনেক শিক্ষার্থী ভিজে গন্তব্যে যান। ইডেন কলেজ কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া আকবর আলী বলেন, "সকালে রোদ দেখে ছাতা ছাড়া বের হই। পরীক্ষার মাঝপথে বৃষ্টি নামে। বের হয়ে অঝোর বৃষ্টিতে ভিজে গেছি।"

বৃষ্টির কারণে ঢাকার ব্যস্ত সড়কগুলোতে যানজট তৈরি হয়। রাজধানীর পল্টন, শাহবাগ, মালিবাগ ও বিজয় সরণি এলাকায় পানি জমে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। আগামী রোববার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বেশ কিছু এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হতে পারে। মঙ্গলবারের পর থেকে মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে পারে। এরপর দেশের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

ঝড়ের ছয় দিনেও বিদ্যুৎ ফেরেনি গঙ্গাচড়ায়

রংপুর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়ের ছয় দিন পার হলেও রংপুরের গঙ্গাচড়ার দুই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ফেরেনি। এতে বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত রোববার সকালে ঝড়ে খুঁটি উপড়ে বিদ্যুতের লাইন ছিঁড়ে যায়। গঙ্গাচড়ার আলমবিদিতর ও নোহালী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের সাত শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়।

আলমবিদিতর ইউনিয়নের খামার মোহনার ব্যবসায়ী আবদুস সালাম বলেন, "বিদ্যুৎ না থাকায় দোকানের ফ্রিজ বন্ধ। ঠান্ডা পানীয় বা আইসক্রিম কিছুই বিক্রি করতে পারছি না। অনেক আইসক্রিম নষ্ট হয়ে গেছে।" নোহালী ইউনিয়নের সরদারপাড়ার নয়া মিয়া বলেন, "হামরা অভাবী মানুষ। এক দিন অটোরিকশা না চলাইলে পেটোত ভাত যায় না। কারেন্ট (বিদ্যুৎ) অভাবে চার্জ দিতে না পারায় অটো চলার বুদ্দি (উপায়) নাই। খুব কষ্টে আছি।"

রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর আওতাধীন গঙ্গাচড়া জোনাল অফিসের ডিজিএম শরীফ লেহাজ আলী বলেন, "লাইন মেরামতের কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে আশা করছি।"