
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুটি স্পষ্ট শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন, উভয় পক্ষই নিজেদের পছন্দের নেতাকে কমিটির প্রধান হিসেবে দাবি করছেন। নতুন কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে কাউন্সিল অধিবেশন হয়। সেখানে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করা হয়নি। যদিও বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেকে নবীনগর শাখার সভাপতি দাবি করেন মাওলানা আমিরুল ইসলাম। তিনি আগের কমিটিতেও একই পদে ছিলেন।
অপরদিকে নতুন কমিটির সভাপতি হিসেবে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাওলানা মেহেদী হাসানের নাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন তাদের অনুসারীরা।
মাওলানা আমিরুল ইসলামের বলেন, কাউন্সিল অধিবেশনে ৯৭ শতাংশ ভোটার তাঁকেই পুনরায় সভাপতি হিসেবে সরাসরি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। তখন মেহেদী হাসান বাধা দেন। একই সঙ্গে হুমকিধমকি দেওয়াসহ মারমুখী আচরণ করেন তিনি । গঠনতন্ত্রবিরোধী আচরণ করে মেহেদী কমিটি ঘোষণায়ও নিষেধ করেন। জেলার নেতারা পরিস্থিতি শান্ত রাখতে কমিটি পরে ঘোষণার কথা জানিয়ে কাউন্সিল সমাপ্ত করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা আমিরুল বলেন, জেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত নবীনগর এসে আবারো কাউন্সিল অধিবেশন ডেকে তৃণমূল নেতাকর্মীর সরাসরি ভোটে কমিটি ঘোষণা করা।
এদিকে কয়েকদিন ধরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে, উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে। এতে সভাপতি হিসেবে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাওলানা মেহেদী হাসান নির্বাচিত হয়েছেন। এই দুই নেতার অনুসারীরাই এসব ছড়িয়ে দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে নতুন এই কমিটির অনুমোদন রয়েছে বলে দাবি করেন মাওলানা মেহেদী হাসান। তাঁর দাবি, ১৫ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলের অধিবেশনের পরবর্তী সময়ে জেলা কার্যালয়ে জেলা, উপজেলা ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে সর্বসম্মতিক্রমে কমিটি গঠিত হয়। এতে মুফতি বেলায়েতুল্লাহ সভাপতি ও তিনি (মেহেদী হাসান) সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন।
কমিটির অনুমোদনের কাগজপত্র বিষয়ে জানতে চাইলে মেহেদী হাসান সাংবাদিকদের বলেন, শিগগিরই তারা একটি সংবাদ সম্মেলন করবেন। সেখানেই অনুমোদনের কাগজ উপস্থাপন করা হবে।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজ্জমের জানান, ‘ওই কাউন্সিল অধিবেশনে আমরা কমিটির ঘোষণা করতে পারিনি। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয় ও উপজেলার নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত সভায় মুফতি বেলায়েতুল্লাহকে সভাপতি ও মাওলানা মেহেদী হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বিষয়টি জানিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো চিঠি এখনও তারা দেননি।
Comments