রাজনীতি এবং উন্নয়ন একে অপরের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। রাজনীতি হলো সমাজে ক্ষমতা ও ক্ষমতাধারীদের সম্পর্ক এবং ক্ষমতা অর্জন ও ব্যবহার প্রক্রিয়া। অন্যদিকে উন্নয়ন হলো অর্থনৈতিক, সামাজিক, এবং সাংস্কৃতিক প্রগতির মাধ্যমে জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন।
রাজনীতি উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ বিভিন্ন নীতিমালা এবং প্রকল্পের মাধ্যমে রাষ্ট্র উন্নয়নের দিকনির্দেশনা প্রদান করে। উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও শিল্প খাতের উন্নয়ন, এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে। সুষ্ঠু ও উন্নয়নমুখী রাজনীতি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। অন্যদিকে উন্নয়নও রাজনীতির ওপর প্রভাব ফেলে। একটি সমাজে উন্নয়ন যত বেশি হবে, তত বেশি জনসচেতনতা এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বাড়বে। উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোর সফল বাস্তবায়ন রাজনীতিবিদদের জনপ্রিয়তা ও ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করে। ফলে, রাজনীতি ও উন্নয়নের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান, যেখানে একটি অন্যটির সফলতার জন্য অপরিহার্য। এক্ষেত্রে আমার রাজনৈতিক প্রথম পাঠ নেয়া শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মনিরুল হক চৌধুরীকে উল্লেখ করবো। যিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন বর্ষীয়ান নেতা, তিনবারের সংসদ সদস্য ও হুইপ এবং চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সম্মানিত উপদেষ্টা। কুমিল্লার সামগ্রিক অগ্রগতি ও আধুনিকায়নে তার অবদান অসামান্য। তিনি শুধু একজন রাজনৈতিক নেতাই নন, বরং কুমিল্লার উন্নয়ন এবং আধুনিকায়নের অন্যতম রূপকারও বটে। তার নেতৃত্বে কুমিল্লায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা আজকের কুমিল্লাকে বসবাসযোগ্য একটি আধুনিক নগরে রূপান্তর ও কুমিল্লার মধ্যে আরেকটি মিনি কুমিল্লা গঠনে সহায়তা করেছে।
মনিরুল হক চৌধুরী তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের প্রারম্ভকালে নির্বাচনী এলাকা ভূশ্চিতে এক চমৎকার কালজয়ী বক্তব্যে ‘ক্যাসেটের উল্টো পিঠের গল্প’ শুনানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন, জনগণকে সঠিক তথ্য দিয়ে প্রকৃত ঘটনা জানানো হবে, যা তখনকার প্রচলিত প্রচারের উল্টো ছিল। এটি ছিল এক ধরনের প্রতীকী বক্তব্য, যা রাজনীতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং জনগণের সত্যিকারের অবস্থা তুলে ধরার অঙ্গীকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। তবে এর পেছনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও ছিল, যেখানে তার বক্তব্যের মাধ্যমে তৎকালীন শাসন ব্যবস্থার কড়া সমালোচনা উঠে আসে। এছাড়াও ‘ক্যাসেটের উল্টো পিঠ’ আমাদের সময়ের একটি জনপ্রিয় শব্দগুচ্ছ, যা কিছুটা নস্টালজিক আর কিছুটা ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে ব্যবহƒত হয়। ১৯৮০ ও ৯০-এর দশকে মিক্সড ক্যাসেট অ্যালবামগুলোতে গান শুনতে গেলে দুটি দিক বা পিঠ থাকত, আর শ্রোতারা উল্টে পাল্টে গান শুনতেন। ক্যাসেটের এই উল্টো পিঠের সাথে গল্পটাও অন্যরকম মাত্রা পেয়েছে, কারণ এটি অনেকটা আমাদের সমাজের ‘অন্য পিঠ’ বা আড়ালে থাকা রাজনৈতিক অজানা বাস্তবতাগুলোকে ইঙ্গিত করে। আজকের রাজনৈতিক বাস্তবতায় ‘ক্যাসেটের উল্টো পিঠের গল্প’ অর্থাৎ পেছনের দৃশ্য বা আড়ালে থাকা সত্যগুলো বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা অনেকসময় রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান বা নেতাদের প্রকাশিত দিক দেখলেও তাদের কর্মকাণ্ডের আড়ালে থাকা প্রকৃত উদ্দেশ্য বা বাস্তবতাকে অনুধাবন করা অনেকটা কঠিন হয়ে পড়ে। কথার বাহার, প্রলোভনমূলক মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, কিংবা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখানো সাজানো চিত্র আমাদের নজরে এলেও রাজনৈতিক অবস্থার মূল সত্যটি প্রকৃতপক্ষে আড়ালে থেকে যায়। রাজনীতির এই উল্টো পিঠটি প্রকাশ পায় যখন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার বা ব্যক্তিস্বার্থ জড়িত থাকে, যা জনমত তৈরিতে প্রভাব ফেলতে পারে। মানুষ যখন রাজনৈতিক পরিস্থিতির এই অপ্রকাশিত দিকগুলো অনুধাবন করে, তখন তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পায় এবং তারাই ভবিষ্যতের রাজনীতিতে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবিত হতে পারে। ‘রাজনীতি মানুষের জন্য’Ñ এই ধারণাটি মূলত রাজনীতির প্রধান উদ্দেশ্যকেই নির্দেশ করে। রাজনীতি একমাত্র তখনই অর্থবহ যখন তা সাধারণ মানুষের কল্যাণের জন্য কাজ করে। রাজনীতির মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত সমাজের সমস্যাগুলো সমাধান করা, সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন করা এবং তাদের অধিকারের সুরক্ষা প্রদান করা। আর একজন সৎ রাজনীতিবিদ ও জননেতার দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের চাহিদা, তাদের সমস্যাগুলো বোঝা এবং সে অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। সাধারণ মানুষ, যারা সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাদের উন্নতি ছাড়া কোনো প্রকৃত রাজনৈতিক সাফল্য কখনো অর্জিত হতে পারে না। কুমিল্লা বৈপ্লবিক পরিবর্তনে, বিশেষত কুমিল্লা-১০ (সাবেক কুমিল্লা-৯) নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে মনিরুল হক চৌধুরীর অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় এবং তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি এই অঞ্চলে নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সর্বদা নিবেদিত রেখেছেন।
সড়ক, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে এলাকাবাসীর জীবনমান উন্নত করতে তার প্রচেষ্টাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পাশাপাশি তরুণ প্রজšে§র উন্নয়ন এবং সমাজে শিক্ষার প্রসারে তার অবদানও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। স্থানীয় জনগণের প্রতি তার আন্তরিকতা এবং উন্নয়নের ধারাবাহিক প্রচেষ্টা তাকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে নিয়ে গেছে। তার এমন কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতেও এই অঞ্চলের জনগণের জন্য নিশ্চিতভাবে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। প্রসঙ্গক্রমে বলতে হচ্ছে, ভূশ্চি দক্ষিণ কুমিল্লার একটি ঐতিহাসিক জনপদ এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে পরিচিত। বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগ থেকেই জায়গাটি ভৌগোলিক দিকগত অবস্থান এবং চারটি প্রধান সড়কের সংযোগস্থল হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। এ ধরনের সংযোগ ভূশ্চিকে একটি আঞ্চলিক অখণ্ডতা ও মোহনায় পরিণত করেছে, যা একে অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিক দিক থেকেও করেছে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। বাণিজ্যিক হাব হিসেবে ভূশ্চির গুরুত্ব কেবলমাত্র এর সড়ক যোগাযোগে সীমাবদ্ধ নয়; এখানকার বাজার এবং বাণিজ্যিক কার্যক্রম অনেক অঞ্চলকে যুক্ত করেছে, যা দক্ষিণ কুমিল্লার আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনীতির উপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এতে করে শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়, রাজনৈতিকভাবে প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রেও এই জনপদ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যার ফলশ্রুতিতে ভূশ্চির প্রাসঙ্গিকতা কেবলমাত্র একটি শহর বা ব্যবসা কেন্দ্র হিসেবে নয়, বরং দক্ষিণ কুমিল্লার ঐতিহাসিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটেও একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। সঙ্গত কারণে কুমিল্লার ভূশ্চিতে একটি স্বতন্ত্র উপজেলা গঠনের দাবিতে মনিরুল হক চৌধুরীর দীর্ঘদিনের রক্তঝরা ঘাম ও সংগ্রাম এলাকার মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। ভূশ্চিকে উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক সুবিধার আওতায় আনার লক্ষ্যে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে স্থানীয় জনগণের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা গঠনের প্রস্তাবনা বাস্তবায়িত হলে প্রশাসনিক সেবা মানুষের আরও কাছে পৌঁছাবে এবং ভূশ্চির জনগণের জন্য উন্নয়নমূলক কাজের সুযোগ আরও বাড়বে। স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, এবং অন্যান্য প্রশাসনিক সুবিধার প্রসার ঘটবে, যা এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। মনিরুল হক চৌধুরীর এই সংগ্রাম শুধু ভূশ্চির প্রশাসনিক অবকাঠামো উন্নত করার জন্য নয়, বরং ভূশ্চির মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি এবং সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্যও। তার এই উদ্যোগ ভূশ্চির মানুষকে নতুনভাবে আশার আলো দেখিয়েছে এবং তাদের প্রাপ্য অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ হয়ে উঠেছে। মনিরুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে কুমিল্লার ভূশ্চিতে নতুন উপজেলা গঠনের উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে যে অবকাঠামোগত এবং প্রশাসনিক স্থাপনাগুলো গড়ে তোলা হয়েছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয় এবং দূরদর্শী সম্পন্ন।
তিনি ইতোমধ্যে ভূশ্চিতে সাবরেজিস্ট্রি অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি, ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জ, আঞ্চলিক পোস্ট অফিস, ডাক বাংলো এবং একটি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। এসব স্থাপনার ফলে স্থানীয় জনগণের প্রশাসনিক এবং সামাজিক সেবাগ্রহণের সুযোগ অনেক সহজ হয়েছে। সাবরেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে এলাকার মানুষ ভূমি সংক্রান্ত কাজ করতে পারছে, পুলিশ ফাঁড়ির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কার্যক্রম আরও সুসংহত হয়েছে এবং ডিজিটাল টেলিফোন এক্সচেঞ্জের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা আধুনিকায়িত হয়েছে। আঞ্চলিক পোস্ট অফিস এবং ডাক বাংলো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভ্রমণকারীদের জন্য সেবা প্রাপ্তি অনেকটাই সহজ হয়েছে।
পাশাপাশি একটি ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে তিনি তরুণ প্রজšে§র ভবিষ্যৎ উন্নয়নের সুযোগ তৈরি করেছেন। তার এই পদক্ষেপগুলো ভূশ্চির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে এবং ভবিষ্যতে এটি নতুন উপজেলা গঠনের দাবিকে আরও সুসংগঠিত এবং যৌক্তিক করে তুলবে। ভূশ্চির অগ্রযাত্রা এবং সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করে একটি শ্রেণি বারবার রাজনৈতিক স্বার্থে এই এলাকার উন্নয়নের সাথে বরাবরই ছিনিমিনি খেলেছে, যা এলাকার সাধারণ মানুষের জন্য অনেক ক্ষোভের এবং হতাশাজনক। ভূশ্চির সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক প্রভাব বিবেচনা করে একটি শ্রেণি বারবার উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলোতে বাধা সৃষ্টি করেছে। যখনই এই অঞ্চলের জন্য নতুন কোনো উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, তখনই কিছু বিশেষ মহল নিজেদের স্বার্থে রাজনৈতিকভাবে এই প্রকল্পগুলোকে আটকে দিয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে ভূশ্চির স্থানীয় জনগণ যেমন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছে, তেমনি উন্নয়নও পিছিয়ে পড়েছে। বিশেষত, ভূশ্চিকে একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টাকে বারবার বাধাগ্রস্ত করা হয়েছে, যা শুধুমাত্র এই এলাকার অগ্রগতিকে থমকে দেয়নি, বরং স্থানীয় বাসিন্দাদের আশা-আকাক্সক্ষাকেও চরমভাবে আঘাত হেনেছে। বিতর্কিত নবগঠিত লালমাই উপজেলার সদরদপ্তর ভূশ্চিতে না করে শুধুমাত্র মনিরুল হক চৌধুরীকে চরম অসম্মান ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাকে চরিতার্থ করার জন্য ফতেহপুরের মতো একটা নামসর্বস্ব অজপাড়াগাঁকে বেছে নেয়া হয়। এক্ষেত্রে অবশ্য ভূশ্চির রাজনৈতিক ভাগ্যটাও কিছুটা প্রতিকূলতার মধ্যে ছিল। এ অঞ্চলের ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক এবং অর্থনৈতিক গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও একশ্রেণির সুবিধাভোগী দুর্বৃত্তদের কারণে রাজনৈতিকভাবে ভূশ্চি বারবার অবহেলিত ও প্রান্তিক অবস্থার শিকার হয়েছে। বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং ক্ষমতাসীনদের স্বার্থান্বেষী কৌশলের কারণে ভূশ্চির সম্ভাবনাগুলো যেন বারবার ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। একটি গভীর রাজনৈতিক সংকট ও অচলাবস্থারও সৃষ্টি হয়েছিল, যা ভূশ্চির উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতাকে বিনষ্ট করেছে। বিশেষত প্রশাসনিক সুবিধার অভাব, স্থানীয় নেতৃত্বের প্রভাব সীমিত থাকা এবং রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী মহলের অনীহা, সবই এই সংকটকে আরও তীব্র করে তুলেছে। ভূশ্চির জনগণের দাবি ছিল একটি নতুন উপজেলা গঠনের মধ্য দিয়ে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক কেন্দ্র হিসেবে এই অঞ্চলকে গড়ে তোলা। তবে রাজনৈতিক সংকটের কারণে এই প্রক্রিয়াগুলো প্রায়শই থমকে যায়, যা ভূশ্চির উন্নয়ন, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলেছে।
তবে এলাকাবাসীর অদম্য চেষ্টায় ও ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এই সংকট অতিক্রম করে তারা একদিন কাক্সিক্ষত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে। পাশাপাশি এই ধরনের রাজনৈতিক খেলা এলাকার মানুষের জন্য হতাশার কারণ হলেও ভূশ্চির জনগণ বারবার প্রমাণ করেছে, তারা উন্নয়নের পক্ষে সবসময়ই ঐক্যবদ্ধ ছিল।
এমনকি তারা স্থানীয় নেতৃত্ব এবং প্রকৃত উন্নয়নকামী ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়িয়ে বারবার উন্নয়নের দাবি জানিয়েছে, যা একদিন নিশ্চয়ই তাদেরকে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাবে। ভূশ্চির জনগণ মনিরুল হক চৌধুরীর প্রতি তাদের গভীর আস্থা প্রকাশ করে আসছে, কারণ তারা বিশ্বাস করে, তিনি তাদের সমস্যা এবং প্রয়োজনের প্রতি অত্যন্ত সচেতন। একই সাথে এটি জনগণের মধ্যে তার প্রতি বিশ্বাস ও অকুণ্ঠ সমর্থনকে দৃঢ় করে। যোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও পরিকল্পনায় ‘ক্যাসেটের উল্টো পিঠের গল্পে’র মতো ভূশ্চি একদিন সত্যিই একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত আঞ্চলিক জোনে পরিণত হবে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট
মানবকণ্ঠ/এসআরএস
Comments